বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ আদিত্যপুর গণহত্যা দিবস



রজত দাস ভুলন আজ আদিত্যপুর গণহত্যা দিবস। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বালাগঞ্জে ও রাজাকার আল বদর -আল শামসদের সহযোগিতায় চলে নিরীহ লোকদের উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ। লাশের পঁচা গন্ধে ভারী হয়ে উঠে বালাগঞ্জের হত্যাযজ্ঞ কবলিত এলাকা।

১৯৭১ সালের ১৪ জুন সিলেটের বালাগঞ্জের আদিত্যপুরে পাকবাহিনী এক বর্বর গণহত্যা চালায়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ১৪ই জুন ৪টি সাজোয়া যান নিয়ে ২৫-৩০জন পাকিস্তানী সেনা এসে হাজির হয় আদিত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। মুহুর্তে খবর ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত হয়ে ওঠে আদিত্যপুর গ্রামবাসী।

পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর আব্দুল আহাদ চৌধুরী (ছাদ মিয়া), মসরু মিয়াসহ কয়েকজন গ্রামে এসে জানায় সবাইকে নিয়ে স্কুল মাঠে বৈঠক হবে। দেওয়া হবে শান্তি কমিটির কার্ড। কার্ড নিতে আসা গ্রামের পুরুষরা বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হলে পাক সেনারা রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে তাঁদের অনেককে। তাঁদের মধ্যে পাক সেনাদের গুলিতে মুহূর্তেই নিস্তেজ হয়ে যায় বেঁধে ফেলা ৬৩টি তাজা প্রাণ। পাক সেনারা সেই দিন মৃত ভেবে ফেলে যায় গুলি লেগে আহত হওয়া শিবপ্রসাদ সেন কংকন নামের একজনকে। সেই কংকন পরে প্রাণে বেঁচে যান ।

এসব হত্যাযজ্ঞ আড়াল করতে ১৭ই জুন রাজাকাররা আবার আদিত্যপুরে এসে গর্ত খুড়ে বিদ্যালয় মাঠে লাশগুলো মাটি চাঁপা দেয়। ২২শে জুন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর নির্দেশে মাটি খুঁড়ে বের করা হয় লাশ। সিলেট সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে লাশগুলো বর্তমান গণকবরে (প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অদূরে) সমাহিত করা হয়।

এই গণকবরের চারপাশে প্রথমে দেয়াল নির্মাণ করা হয়। পরে সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীর উদ্যোগে জেলা পরিষদের মাধ্যমে এখানে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ। এছাড়া গণকবরে যাওয়ার রাস্তাসহ একটি কালভার্ট ও নির্মাণ করা হয় । বালাগঞ্জ মুক্তিযোদ্বা কমান্ডার মোঃ কামাল মিয়া কনা বর্তমান সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষায় যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার প্রশংসা করে সুরিকোনায় ও একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের দাবি জানান ।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!