প্রধানমন্ত্রী চাইলে আরও এক বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোনো কিছু বললে আমি না করি না।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে তার নিজ দফতরে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
মুহিত বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অসাধ্য সাধন করবে। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার কারণে আশা করছি, আগামী ৫ বছরেই বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত দেশে পরিণত হবে। তবে কিছু সংখ্যক মানুষ সবসময় সরকারের ওপর নির্ভরশীল থাকে। দারিদ্র্য নিরসনে সব থেকে ভালো করেছে মালয়েশিয়া তারপরও সেখানে সাত শতাংশ দরিদ্র রয়েছে।’
তিনি বলেন, আগামী নতুন সরকারের প্রধান কাজ হবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, ভোট ভালো হয়েছে। উন্নত দেশে ৪০ শতাংশ ভোট পড়লেই তারা খুশি হন। কিন্তু আমাদের দেশে সাধারণত ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট হলে ভালো নির্বাচন ধরা হয়। তবে এবার ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এর কারণ হলো- জনগণ জেনে গেছে শেখ হাসিনা ছাড়া উন্নয়ন হবে না। তাই এ নির্বাচনে জনগণ বেশি ভোট দিয়েছে।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা রেকর্ড সংখ্যক আসনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। কিন্তু অবসরে যাওয়ার কখা বলে এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাই তাকে আবার মন্ত্রী রাখতে হলে টেকনোক্র্যাট কোটায় রাখতে হবে।
গত সরকারের দুই মেয়াদে টানা দশটি বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। একাদশ জাতীয় সংসদে মহাজোট যে উন্নয়নের ফিরিস্তি দেখিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে তাতে মুহিতের অবদানও কম নেই। উন্নয়নে মুহিতের অনেক অবদান তবে ব্যর্থতাও কম নেই। তার দশ বছরেই ঘটেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, ব্যাংকিং খাতে হলমার্ক, বেসিক, বিসমিল্লাহ, এ্যাননটেক্সের মতো কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে।
গত রোববার (৩০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বচানের প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, ২৯৯ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৭টি। ২২টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জাতীয় পার্টি। বিএনপি ৫টি আসন ও অন্যান্যরা ১৩টি আসনে জয় লাভ করেছে। সে হিসাবে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল হওয়ার মতো আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাই টানা তৃতীয়বারের মতো এবং স্বাধীনতার পর চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের দাফতরিক কাজ করার জন্য ইতোমধ্যে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কতগুলো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গঠিত হবে নতুন মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে। দু’একদিনের মধ্যেই নির্বাচিত এমপিদের গেজেট জারি করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর স্পিকার তাদের শপথ পড়াবেন।