সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলিসের হ্যাটট্রিকে রংপুরকে হারাল ঢাকা



মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল শুক্রবার দিনের প্রথম ম্যাচে ২ রানের জয় পেয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকার ৯ উইকেটে ১৮৩ রানের জবাবে রংপুর তোলে ৯ উইকেটে ১৮১ রান।

বড় রান তাড়ায় শুরুতেই আউট হয়ে যান রংপুরের মূল ভরসা ক্রিস গেইল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে শুভাগত হোমের বল বোলারের মাথার উপর দিয়ে ছক্কার জন্য ওড়ান ক্যারিবীয় তারকা। লং অফে অবিশ্বাস্য রিলে ক্যাচ নিয়ে তাকে ফেরান তারই স্বদেশি অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল ও কাইরান পোলার্ড। পরের ওভারেই রাসেলের বলে উইকেট রক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন আরেক ওপেনার মেহেদী মারুফ।

এরপরই নিজেদের সেরা জুটিটি পায় রংপুর। মিঠুনকে নিয়ে ১২১ রানের জুটি গড়েন রুশো। ৪৪ বলে ৪ ছক্কা ও ৮ চারে ৮৩ রান করা রুশোকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে ঢাকাকে ম্যাচে ফেরান আলিস আল ইসলাম। পরের ওভারে রবি বোপারাকে সুনিল নারাইনের ক্যাচ বানান সাকিব। ইনিংসের অষ্টাদশ ওভারের শেষ তিন বলে মিঠুন, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও ফরহাদ রেজাকে আউট করে হ্যাটট্রিক তুলে নেন ২২ বছর বয়সী অফস্পিনার আল ইসলাম। উনিশতম ওভারে সোহাগ গাজী ও বেনি হাওয়েলকে ফিরিয়ে ঢাকার জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেন সুনিল নারাইন।

শেষ ওভারে টানা তৃতীয় জয়ের জন্য রংপুরের দরকার ছিল ১৪ রান। প্রথম দুই বলেই কাভার দিয়ে চার হাঁকান দশম ব্যাটসম্যান শফিউল। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নেন ডানহাতি এই পেসার। আর ইসলামের চতুর্থ ও পঞ্চম বল থেকে একটি রান নিতে পারেন শেষ ব্যাটসম্যান নাজমুল ইসলাম অপু। ইনিংসের শেষ বলে তাই দরকার ছিল চার রানের। ফুলটস পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি শফিউল। শর্ট ফাইন লেগে ঠেলে দিয়ে মাত্র একটি রান নিতে পারেন তিনি।

এর আগে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নৈপুণ্যে বড় সংগ্রহ গড়ে ঢাকা। রংপুরকে শুরুতেই সাফল্য এনে দেন গাজী। নিজের প্রথম ও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই বিপজ্জনক জাজাইকে ফিরিয়ে দেন ডানহাতি এই অফস্পিনার। আগের দুই ম্যাচেই ফিফটি তুলে নেওয়া আফগান বাঁহাতি ফেরেন ৩ বলে ১ রান করে। পরের ওভারে আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নারাইনকে বিদায় করেন অধিনায়ক মাশরাফি।

তিনে নামা রনি তালুকদারের ছোট্ট ঝড় থামে হাওয়েলের অসাধারণ এক ক্যাচে। সোহাগ গাজীর বল মিড অফের উপর দিয়ে ওড়ানোর চেষ্টায় ঠিকমতো টাইমিং করতে ব্যর্থ হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এক্সট্রা কভার থেকে পেছনে অনেকটা দৌড়ে দারুণ দক্ষতায় বল তালুবন্দি করেন হাওয়েল। দুই চার ও এক ছক্কায় ৮ বলে ১৮ রান করেন রনি।

চলতি আসরে প্রথমবারের মতো ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাওয়া মিজানুর রহমানও ইংনিস বড় করতে পারেননি। একটি করে ছক্কা ও চারে ১২ বলে ১৫ রান করে হাওয়েলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি।

১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান তোলা ঢাকার ইনিংস গতি পায় পোলার্ড ক্রিজে আসার পর। নাজমুল ইসলামের করা ইংনিসের ত্রয়োদশ ওভারে তিন ছক্কায় তিনি নেন ২২ রান। চারটি চার ও তিনটি ছক্কায় ২১ বলে করেন চলতি আসরের দ্রুততম ফিফটি। ফিফটির পর বেশি দূর এগোতে পারেননি পোলার্ড। ২৬ বলে ৬২ রান করে হাওয়েলের বলে ধরা পড়েন মারুফের হাতে।

এক প্রান্ত আগলে রাখা সাকিবকে ৩৬ রানে ফেরান রেজা। শেষ ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হয়ে যান ৩ ছক্কায় ১৩ বলে ২৩ রান করা রাসেল। আগের দুই ম্যাচে শেষ দিকে কার্যকর ইনিংস খেলা শুভাগত এদিন ব্যর্থ। ৮ বলে ৩ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। ইনিংসের শেষ বলে আউট হন নুরুল হাসান সোহান। শেষ ওভারে ৭ রান তুলতে তিন উইকেট হারায় ঢাকা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ডায়নাইমাটস: ২০ ওভারে ১৮৩/৯ (জাজাই ১, নারাইন ৮, রনি ১৮, সাকিব ৩৬, মিজানুর ১৫, পোলার্ড ৬২, রাসেল ২৩, শুভাগত ৩, সোহান ৪, রুবেল ১*; মাশরাফি ৪-০-২২-১, সোহাগ ৩-০-২৮-২, শফিউল ৪-০-৩৫-৩, অপু ২-০-৩৪-০, রেজা ৩-০-৩২-১, হাওয়েল ৪-০-২৫-২)।

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৮১/৯ (মারুফ ১০, গেইল ৮, রুশো ৮৩, মিঠুন ৪৯, বোপারা ৩, হাওয়েল ১৩, মাশরাফি ০, ফরহাদ ০, সোহাগ ০, শফিউল ১০*, নাজমুল ১*; রাসেল ৩-০-২৬-১, রুবেল ৩-০-২৬-০, শুভাগত ২-০-২৭-১, সাকিব ৪-০-৩৫-১, নারাইন ৪-০-৪০-২, আল ইসলাম ৪-০-২৬-৪)।

ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ২ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আলিস আল ইসলাম

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!