একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সহিংসতায় নিহত বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সায়েম আহমদ সুহেলের মা-বাবাকে সহমর্মিতা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। সোমবার (১৪ জানুয়ারী) বিকালে বালাগঞ্জের পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের নলজুড় গ্রামে নিহত সুহেলের বাড়িতে এসে তাদের প্রতি সমবেদনা জানান।
এর আগে ঐক্যফ্রণ্ট নেতৃবৃন্দ নিহত সায়েম আহমদ সুহেলের কবর জিয়ারত করেন। এসময় ঐক্যফ্রণ্টের নেতা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, জেএসডির সভাপতি আসম আব্দুর রব, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ঐক্যফ্রণ্ট নেতৃবৃন্দ স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত শোকসভায় বক্তৃতা করেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমীর বলেন, দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সায়েম আহমদ সুহেল শহীদ হয়েছে। বালাগঞ্জের মানুষকে সংগ্রামী উল্লেখ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সায়েম আহমদ সুহেলের মা-বাবার চোখের পানি বৃথা যাবে না, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন হবেই।
বিএনপি নেতা আব্দুল আহাদ খান জামাল, বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. মুজিবুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ আলাউদ্দিন রিপনের যৌথ পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতাকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আপনারা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেন তবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সায়েম আহমদ সুহেল হত্যার বিচার হবে।
সভায় বক্তৃতাকালে আসম আব্দুর রব বলেন, নির্বাচনের দিন শুধু সুহেলের বুকে গুলি করা হয়নি, গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, বাংলাদেশর মানুষের বুকে গুলি করা হয়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী, কলিম উদ্দিন মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর ভাই বিএনপির নেতা আছকির আলী, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া, ওসমানীগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক চৌধুরী, ওসমানীগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মতাহির আলী, সিলেট সিটি কাউন্সিল রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, দেওয়ান বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল আলম, দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজ মো. ফখরুদ্দিন, বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুন নূর, সুরুজ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেল প্রমুখ। সভায় নিহত সায়েম আহমদ সুহেলের চাচাতো ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান ছাত্রদল নেতা সুহেল হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সকলের প্রতি সহযোগিতা কামনা করেন। এর আগে সিলেট পৌঁছে ঐক্যফ্রণ্ট নেতৃবৃন্দ হযরত শাহ জালাল (রহ.) ও হযরত শাহ পরাণ (রহ.)’র মাজার জিয়ারত করেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন বালাগঞ্জের আজিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ছাত্রদল নেতা সুহেল নিহত হন। ঘটনার পর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে গত ০১ জানুয়ারি নিহত সায়েম আহমদ সুহেলের দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় নিহতের চাচাতো ভাই লুৎফুর রহমান বাদি হয়ে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (৫ম আদালত) আদালতে গত ১০ জানুয়ারি একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর সিআর-০২।