প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে ফেলতে উদ্যোগ নেয়ার পরেও তা না সরানো দুঃখজনক। তবে এ ঘটনার (চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড) পর এখানে আর রাসায়নিকের ব্যবসা করতে দেয়া যাবে না। এ ঘনবসতি এলাকায় যেন আর রাসায়নিক ব্যবসা না থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখে তাদের যেন ভালো চিকিৎসা হয় ডাক্তারদের সে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে বার্ন ইউনিটে প্রবেশ করে দগ্ধ ও আহতদের দেখে বেলা ১১টার দিকে বেরিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি রোগীদের খোঁজ-খবর নেন এবং রোগীর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া ডাক্তাদের সঙ্গেও রোগীদের অবস্থা নিয়ে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক স্বপন, প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, স্থানীয় এমপি হাজী মো. সেলিম, অধ্যাপক ডা. সামন্তলাল সেন উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম না সরানো দুঃখজনক। এর আগে রাসায়নিক ব্যবসা সরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কিছু দিন কাজ হওয়ার পর আর হয়নি।
পুরান ঢাকায় রাসায়নিক যেন না থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা চান। পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতেও বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বার্ন ইউনিটের দ্বিতীয় তলার নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (আইসিইউ) সামনে যান। সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন ‘শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’র প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আইসিইউতে এলেও চিকিৎসাধীনদের ইনফেকশন হবে বা চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটবে চিন্তা করে ভেতরে ঢোকেননি। তিনি বাইরে অপেক্ষমাণ স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেন, আপনারা চিন্তা করবেন না। চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকার দেখছে। রোগীরা সুস্থ হলে তাদের পুনর্বাসনের চিন্তাও করছে সরকার।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, আপনারা অনেক কষ্ট করছেন, করেছেন। রোগীরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে সেটাও দেখবেন।
চকবাজারের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে নয়জন বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন।
সেদিন সারা রাত জেগে থেকে প্রতি মুহূর্তে খোঁজ-খবর নেন সরকার প্রধান। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেন তিনি। এছাড়া পরবর্তীতে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।