কিন্তু ওই রাজ্যেরই অন্য কয়েকটি জায়গায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির এক অন্য ছবি উঠে এসেছে।
অন্তত দু’জন ইসলাম ধর্মাবলম্বী স্বেচ্ছায় রোজা ভেঙ্গে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন দুই হিন্দু ধর্মাবলম্বী রোগীর।
আসামের বিশ্বনাথ চরিয়ালির বাসিন্দা অনিল বোরা তার ৮২ বছর বয়সী মা, রেবতী বোরাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন গত সপ্তাহে। কিছু পরীক্ষার পরে জানা যায় তাকে জরুরী ভিত্তিতে রক্ত দিতে হবে। মিসেস বোরার রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। সেই রক্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
ফেসবুকের মাধ্যমে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠনের সঙ্গে অনিল বোরার যোগাযোগ হয় শোনিতপুরের বাসিন্দা মুন্না আনসারির সঙ্গে।
গত রবিবার মি. আনসারি রোজা ভেঙ্গে রক্ত দিয়েছেন রেবতী বোরাকে।
অনিল বোরা বলছেন, “রোজা ভেঙ্গে তিনি যেভাবে আমার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছেন, তার জন্য ওর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
গুয়াহাটির পান্নাউল্লা আহমেদ একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী তিনি। তিনি ও রোজা ভেঙ্গে রক্ত দিয়েছেন।
তার এক বন্ধু জানতে পারে যে এক রোগীর রক্ত লাগবে। মি. আহমেদের রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। আর রোগীর ও পজিটিভ। অনেক খুঁজেও রক্তদাতা পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতাল থেকেই বলা হয় যে বি পজিটিভ রক্ত দিয়ে তার বদলে রোগীকে তারা সঠিক গ্রুপের রক্ত দিয়ে দিতে পারে।
গোলাঘাট জেলার বাসিন্দা ইয়াসিন আলী রোজার শেষে বাবার সঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ওজন মাপতে। সেখানে গিয়ে হঠাৎই এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়, যিনি আড়াই বছরের শিশুকন্যার জন্য রক্ত খুঁজছিলেন।
সঙ্গে সঙ্গেই রক্ত দিতে রাজী হয়ে যান মি. আলী।
বিবিসি বাংলাকে টেলিফোনে তিনি বলছিলেন, “যদিও আমাকে রোজা ভাঙ্গতে হয় নি সেদিন রক্ত দেওয়ার জন্য। তবে প্রয়োজন হলে ভাঙ্গতেও দ্বিধা করতাম না।”
“কোরানেই তো আছে একজন মানুষের জীবন বাঁচানো সবথেকে বড় কাজ। তার জন্য রোজা যদি ভাঙ্গতে হয়, তাতেই বা কী যায় আসে?”
এদের ঘটনা ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এই তিনজনই বলছেন যে তারা একজন মানুষের প্রাণ বাচাতে যা করা উচিত বলে মনে হয়েছে, সেটাই করেছেন। এত প্রচার করার কিছু হয় নি এ নিয়ে।
বিবিসি