বিশ্ব শান্তি রক্ষা মিশন ইউনিফিলের ৬টি দেশের নৌবাহিনী রয়েছে লেবাননের সমুদ্র সিমানায়। এর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের নৌবাহিনী। ২০১০ সাল থেকে দক্ষ ও সুনামের সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনী লেবাননের সমুদ্রসীমায় চোরাচালান রোধ,অনাকাঙ্খিত জাহাজ চিহ্নিত করা, প্রয়োজনে অপারেশনে সহায়তা করাসহ বিভিন্নভাবে লেবাননকে সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিএনএস বিজয় এ দায়িত্ব পালন করছেন ১১৬ জন। সমুদ্র সিমানা রক্ষার পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রশিক্ষণ দিচ্ছে লেবানন নৌবাহিনীর সদস্যদেরও।
গত ১২ জুন (বুধবার) ১১০ জন্ অফিসার ও নাবিক অর্জন করেন ইউনিফিলের মেডেল, আয়োজন করা হয় ইউ এন মেডেল অ্যাওয়ার্ড সেরেমনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিফিলের মেরিটাইম টাস্ক ফোর্সের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এডুয়ার্ডো অগাস্টো ওয়াইল্যান্ড (ব্রাজিল নৌবাহীনি)। বিশেষ অতিথি ছিলেন – লেবানন নৌবাহীনি প্রধান হুসনি দাহের, বাংলাদেশ থেকে আগত নৌবাহিনীর বিশেষ প্রতিনিধি দলের প্রধান কমান্ডার মোজাম্মেল হক, লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার, তুর্কী ও অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রদূত সহ অনেকে। অনুষ্ঠানের অতিথি বৃন্দ বাংলাদেশের ১১০জন অফিসার ও নাবিকের গলায় মেডেল পরিয়ে দেন।
বিশেষ প্রতিনিধিদলের প্রধান কমান্ডার মোজাম্মেল হক বলেন, লেবাননে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যে অ্যাওয়ার্ড আজ ১১০ জন পেল, তা সত্যিই গর্বের বিষয়। তিনি আরো বলেন, লেবাননে বাংলাদেশের নিন্ম শ্রমিক থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছে। রয়েছে বাংলাদেশের দূতাবাসও। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য আজ আমরা লেবাননে সুপরিচিত।
বাংলাদেশ থেকে আগত নৌবাহীনির অডিট টিমের প্রধান ক্যাপ্টেন এম শরিফ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, লেবাননে এখন মুখে মুখে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রসংসা। এটা আমাদের বিশাল অর্জন। বাংলাদেশে ও দেশের নৌবাহিনীর জন্য অনেক গৌরবের বিষয়।
অনুষ্ঠানের মেডেল পরানো শেষে মেডেল প্যারেড উপলক্ষে কেক কাটা হয়, এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জাহাজ বিজয়ের প্রধান ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম। পরে আগত অতিথিদের সম্মানে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়।
লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশের শান্তি রক্ষার যে কার্যক্রম এটি এখন সারা বিশ্ব জানে। শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ এখন অন্যতম। আজকের এই অর্জন অত্যন্ত অনন্দের বিষয়। তিনি আরো বলেন, বিশ্বের বহুদেশ এই শান্তি রক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করছে। দেখা যায় অনেক দেশের কোন না কোন দুর্নাম রয়েছে। সে দিক থেকে বাংলাদেশ একটি মাত্র দেশে যাদের কোন দুর্নাম নেই।
লেবাননে জাতিসংঘের পতাকার সঙ্গে পতপত করে উড়ছে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা, ইসরায়েলের জলসীমার কাছে নিয়মিত মহড়ায় অংশ নেয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশের এই অর্জিত সুনাম রক্ষায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান বিশিষ্টজনেরা।