মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরের জামিন বাতিল : জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ আদালতের



সিলেট শহরতলীর শাহপরাণ এলাকায় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা আফছর আহমদের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে পুলিশ এসল্ট মামলায় সিলেট আদালতে জামিন আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম । আদালতের বিচারক জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বুধবার সকালে এমএম-১ আদালতের বিচারক এই নিদেশে দেন । জানা যায় তিনি উচ্চ-আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ।

প্রসঙ্গত ,সিলেট শহরতলীর শাহপরাণ এলাকায় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা আফসর আহমদের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। গত ২৯ জুন রাত ১টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে আটক করে নিয়ে যায়।

জানা যায়, জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন এডভোকেট আফসর আহমদ। সভাপতি পদে তাকে নিয়ে সরব হয়ে উঠেছিলেন গ্রুপের নেতারা। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন তিনি। সভাপতি পদে লড়বেন না বলে। লড়েন  সাধারণ সম্পাদক পদে। আগেই এ পদে নিজের নাম ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন একই এলাকার আরেক সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেন। সভাপতি পদ থেকে সাধারণ সম্পাদক হতে চাওয়ায় নিজ এলাকার এক সময়ের প্রিয়জন জাহাঙ্গীরের মুখোমুখি হন আফসর আহমদ।

এডভোকেট আফসর আহমদ সিলেট শহরতলীর খাদিমপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে এলাকায় তার শক্তিশালী বলয় রয়েছে। সম্প্রতি সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত তিনি। একই এলাকা মেজরটিলা-ইসলামপুরের বাসিন্দা হচ্ছেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। আগে টিলাগড় গ্রুপের সিনিয়র নেতা ছিলেন তিনি। এখন মেজরটিলা-ইসলামপুরে নিজের গ্রুপ তৈরি করেছেন। এলাকার প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীর আলম। ছাত্রলীগের নেতা হওয়ার সুবাদে এলাকায় আগে থেকেই অবস্থান সুসংহত তার। আর চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে আফসর আহমদও শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পূর্বপর্যন্ত তাদের দুইজনের সম্পর্ক ভালো ছিলো। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তারা মুখোমুখি হয়েছিলেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হতে আফসরকে প্রথমে ছাড় দিতে চাননি জাহাঙ্গীর। দু’জনই প্রার্থী থাকায় এলাকার ভোটাররা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েন। এ নিয়ে এলাকার মুরব্বী ও টিলাগড়ের নিয়ন্ত্রক সিনিয়র ভাইয়েরা হস্তক্ষেপ করেন। তাদের মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত ইউনিয়ন নির্বাচনে আফসর আহমদকে ছাড় দেন জাহাঙ্গীর আলম। প্রকাশ্য বৈঠক করে নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়ে সিলেট শহরঘেঁষা ওই ইউনিয়নে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে তিনি মাঠেও কাজ করেন।

নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আফসর ও জাহাঙ্গীরের মধ্যে মূলত এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। জাহাঙ্গীরের গ্রুপের বাধার কারণে মেজরটিলা-ইসলামপুর এলাকায় এডভোকেট আফসর আহমদ নিজের অবস্থান সুসংহত করতে পারেননি। তবে পার্শ্ববর্তী শাহ্পরাণ এলাকায় তিনি নিজের গ্রুপের সুসংসহত অবস্থান গড়ে তোলেন। এলাকার কর্তৃত্ব ও গ্রুপিং রাজনীতির কারণে গত ৩-৪ বছর ধরে জাহাঙ্গীর ও আফসরের সম্পর্কে নানা সময় টানাপোড়েন দেখা দেয়। এ নিয়ে মেজরটিলা এলাকায় প্রায় সময়ই উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে- মাঠের বিরোধ ততোটা চাঙ্গা ছিল না। কিন্তু যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদকে ঘিরেই দুইজনের বিরোধ এবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দুইজনের অনুসারীরা খাদিমপাড়া এলাকায় মুখোমুখি ও হন।

 

 

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!