আওলাদে রাসুল আল্লামা সায়্যিদ আসজাদ মাদানী বলেছেন, ভারতবর্ষকে ব্রিটিশদের করালগ্রাস থেকে মুক্ত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দারুল উলুম দেওবন্দ। সেই দারুল উলুমের অনুকরণে প্রতিষ্ঠিত জামেয়া রেঙ্গার শতবার্ষিকী ও দস্তারবন্দী মহাসম্মেলন। এই সম্মেলনে জামেয়া রেঙ্গার প্রায় চার হাজার সন্তানের মাথায় পাগড়ি তুলে দেওয়া হয়েছে। এটা শুধু পাগড়ি নয় এটা হচ্ছে মহাগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের প্রতীক। এই প্রতীক নিয়ে নিরবে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার শতবার্ষিকী ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে সর্বশেষ দিনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আল্লামা আসজাদ মাদানী আরও বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের দূর্গ খ্যাত কওমি মাদ্রাসাগুলোকে দেশের বর্তমান অবস্থায় সোচ্চার ও স্বাধীনতা সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে এবং ভারতসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সিলেটের শীর্ষ ইসলামি বিদ্যাপীঠ ঐতিহ্যবাহী জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার শতবার্ষিকী ও দস্তারবন্দী মহাসম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিন ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার জুমআর নামাজের মুসল্লির ঢল নামে। সম্মেলনের বিশাল মাঠে মুসল্লি সংকুলান না হওয়ায় মাদরাসার মাঠ, মসজিদ ও পেন্ডালের আশপাশের বিশাল এলাকাজুড়ে মুসল্লিরা জুমআর নামাজের জন্য অংশগ্রহণ করেন।
জুমআর ইমামিত করেন আওলাদে রাসুল আল্লামা সায়্যিদ আসজাদ মাদানী।
জুমআর খুতবা ও নামাজ পরবর্তীতে আল্লামা আসজাদ মাদানী দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য বিশেষ মোনাজাত করেন।
মাওলানা মুফতি মুশাহিদ কাসিমী, শামসুল মোহাম্মদ ইলিয়াস ও আহমদ যাকারিয়ার যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান, মাওলানা নযীর আহমদ ঝিংগাবাড়ি, শায়খ আব্দুশ শহীদ গলমুকাপনী, শায়খুল হাদিস মাওলানা মুকাদ্দাস আলী, শায়খুল হাদিস মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আব্দুল হাই চৌধুরী, মুফতি আব্দুস সুবহান, মাওলানা তহুর উদ্দীন, মাওলানা নুরুল ইসলাম সুফিয়ান, মাওলানা মুখলিসুর রহমান কিয়ামপুরী, মাওলানা ফখরুল ইসলাম মোগলাবাজারী।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বয়ান পেশ করেন, মাওলানা বিলাল বাওয়া লন্ডন, মাওলানা আশরাফ মাকদাম, লন্ডন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান লন্ডন, শেখ মানসুর বিন মুহাম্মদ মাকিনী, সৌদি আরব, মাওলানা যিকরুল্লাহ খান ফরিদাবাদ, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ ঢাকা, মাওলানা আসগর হোসাইন লন্ডন, মাওলানা আব্দুর রহহিম লিমবাদা, লন্ডন, অধ্যক্ষ মিযানুর রহমান কাপাসিয়া, মাওলানা সাজিদুর রহমান বি-বাড়িয়া, মাওলানা মামুনুল হক, ফরিদাবাদ মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, দৈনিক ইনকিলাবের সহ-সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা শফিকুর রহমান, মুফতি শফিকুল ইসলাম, ড. মুশতাক আহমদ, মাওলানা হারুনুর রশীদ কানাইঘাটী, মাওলানা অসিউর রহমান ঢাকা, মাওলানা ইসমাইল আলী, মাওলানা আব্দুল খালিক বাহুবলী, মাওলানা সিবগাতুল্লাহ নূর, মাওলানা তাফহীমুল হক, প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, কওমি মাদরাসা হচ্ছে দ্বীন রক্ষার দূর্গ। কওমি মাদরাসা আদর্শ মানুষ তৈরি করে। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ এসব কওমি মাদরাসা শিক্ষিতরা কখনও করে না।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক পশ্চিমা সভ্যতার ষড়যন্ত্রমূলক প্রকল্প। যার মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের জন্ম প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সমূহ আয়োজন করছে পশ্চিমা সভ্যতার এদেশীয় এজেন্টরা। এই ষড়যন্ত্রকে রুখে দাঁড়াতে আলেম ওলামাসহ তাওহিদী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের এনআরসি ও ক্যাব বিরোধী আন্দোলনে ভারতের মুসলমানদের সাথে বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বার্কিং-ডেগেনহাম বারা, লন্ডন এর সম্মানিত কাউন্সিলর সদরুজ্জামান খান, সাবেক সংসদ আলহাজ্ব শফি আহমেদ চৌধুরী, মাওলানা সালেহ মুহাম্মদ জাকারিয়া, মাওলানা হাবীবে রব্বানী চৌধুরী তালবাড়ি, মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা মুলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা শাহ মিযানুল হক লন্ডন , মাওলানা আব্দুল হাফিজ লন্ডন, মাওলানা আব্দুল হক হক্কানী বগুড়া, সৈয়দ শামীম আহমদ, মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হান্নান ধনপুরী বালাগঞ্জ উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ আলী আসগর প্রমুখ।
সম্মেলনে জামেয়ার ১৪৩৬ হিজরি থেকে ১৪৪০ হিজরির উলামা ফাযিলকে দস্তারে ফযিলত প্রদান করা হয়।