শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন : নিশ্চিহ্নের পথে বালাগঞ্জের ঐয়া গ্রাম



বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন। অবহেলিত এ জনপদটিতে আজো বৃহৎ কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের ছোয়া লাগেনি। বরং বারবার বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে তাদের। নিরিবিলি শান্ত সুশীতল বেষ্টিত এই পূর্ব পৈলনপুরের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন তো দূরের কথা বারবার ঠকানো হয়েছে তাদেরকে। সম্প্রতি পূর্ব পৈলনপুরের শান্ত বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। পূর্ব পৈলনপুরের ঐয়া গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ড্রেজার দিয়ে কোনো ধরণের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে বালু উত্তোলন।

জানা যায়, পূর্ব পৈলনপুরের ঐয়া গ্রামস্থ কুশিয়ারা নদীর তলদেশ থেকে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহলকে ম্যানেজ করে প্রায় ৩ মাস যাবত বালু উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট। প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকার মতো বালু বিক্রি করছে এই অসাধু মহল। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী গ্রাম ঐয়া প্রায় নিশ্চিহ্নের পথে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অত্র গ্রামের মায়া মিয়া, আব্দুস সালাম মনাই, চেরাগ মিয়া, মশাহিদ মিয়া, মুজাহিদ মিয়া, ফরিদ মিয়া, সানুর মিয়া, আনুর মিয়া ও ইদরাখ আলী মিলে ড্রেজারের মালিক ইমরান আলী ও রাসেল আহমদের সাথে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে ঐয়া গ্রামকে।

জানা যায়, নদীর উপর থেকে তলদেশ পর্যন্ত প্রায় ২০০ ফুট গভীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাশে গড়ে উঠা ঐয়া গ্রামের পঞ্চায়েতী কবরস্থান, মসজিদ, মাদ্রাসা সহ একাধিক স্থাপনা হুমকির সম্মুখীন।

কথা হয়, ঐয়া গ্রামের প্রবীন মুরুব্বী মো. আছকির আলী, মো. নাসির উদ্দিন, বখতিয়ার উদ্দিন, আখতার মিয়া, সাইফুর মিয়া, মুহিবুর রহমান ও জুবেল মিয়ার সাথে। তারা জানান, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে অস্তিত্ব সংকটের মুখে তারা। কান্না জড়িত কন্ঠে তারা জানান, যেভাবে ফাটল দেখা
দিয়েছে তাতে কোন সময় যে কি হয় একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।

তাদের অভিযোগ, স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বালু খেকোদের সাথে যোগসাজস করেছেন। এ ব্যাপারে পূর্ব পৈলনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন বলেন, আমি এ ব্যাপারে সোচ্চার আছি। স্থানীয় কয়েকজনও এখানে বায়াষ্ট। আমি পদক্ষেপ নিচ্ছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, যখনই পদক্ষেপ নেয়া হয় তখনি বালু খেকোরা এখান থেকে সরে যায়।

বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, এ ব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যেহেতু আমরা অভিযানে গেলে বালু উত্তোলনকারীরা সটকে পড়ে তাই আমরা অন্য পন্থায় এদের প্রতিরোধ করবো।

স্থানীয় প্রশাসন যখনই এই এলাকায় অভিযান করতে যান তখনই অদৃশ্য একটি মহলের ইঙ্গিতে বালু খেকোরা খবর পেয়ে যায়। খবর পাওয়া মাত্রই তারা সটকে পড়ে। তাই স্থানীয় প্রশাসন বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টায় আছেন। এই বালু খেকোদের কাছ থেকে রেহাই চান স্থানীয় এলাকাবাসী। তাই এই বালুখেকোদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!