করোনার আতঙ্কে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়ে বাড়ি চলে গেছেন রোগীরা। অথচ দুই দিন আগেও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুসহ অনেক রোগী ছিল এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু মঙ্গলবার বিকাল থেকে রোগী শূন্য হয়ে পড়ে কমলগঞ্জের এ হাসপাতাল। বিকাল সাড়ে ৫ টার পরে মাইসা আক্তার নামের অসুস্থ্য শিশু রোগীকে নিয়ে শিশুটির মা শেফালী বাড়ি ফিরে যান। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরোগীর্ মা বলেন, করোনাভাইরাসের ভয়ে কোনো স্বজন তাকে দেখতে হাসপাতালে আসেননি। রোগীশূন্য হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে অবস্থান করতে ভয় পাচ্ছেন। তাই শিশুটি সুস্থ্য হওয়ার আগেই বুকে আগলে হাসপাতাল ছাড়েন তিনি। এদিকে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো রোগী শূন্য ছিল।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে গত এক্ সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের আউটডোর-ইনডোরে শত শত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন চিকিৎসকরা। অথচ ভাইরাস থেকে রক্ষায় তাদের নেই কোনো পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই)। ভাইরাস থেকে নিজেকে সুরক্ষা করতে সরকারিভাবে তাদের দেয়া হয়নি বিশেষ কোনো পোশাক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ২০টি আইসোলেশন বেড তৈরী রাখলেও কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে পরীক্ষার জন্য এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছেনি কীট।
হাসপাতালের আউটডোর এবং ইনডোরে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার কোনো পিপিই না থাকলেও গত মঙ্গলবার সকাল থেকে চিকিৎসক ও নার্সরা স্ব-স্ব উদ্যোগে রেইনকোট ক্রয় করে তা পরিধান করে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুবুল আলম ভুঁইয়া বলেন, গত তিন দিন মানুষ আতঙ্কে হাসপাতালের আউটডোরে ভিড় করলেও ভয়ে কেউ হাসপাতালে ভর্তি হননি। রোববার ১২ জন ও সোমবার ৬ জন রোগী ভর্তি ছিল। মঙ্গলবার বিকালে একমাত্র শিশু রোগী হাসপাতাল ছাড়ায় হাসপাতালের সব ওয়ার্ডগুলোই খালি হয়ে গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুবুল আলম ভুঁইয়া বলেন, বুধবার চিকিৎসকদের করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার ১০ সেট সরঞ্জাম হাসপাতালে পৌঁছেছে। এছাড়াও বেসরকারিভাবে আরও ১০ সেট সরঞ্জাম আমাদের কাছে পৌঁছেছে।