‘তারুণ্যই শক্তি’ এই কথাটিকে বাস্তবে রুপ দিয়েছেন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের পশ্চিম হায়দরপুর গ্রামের উদ্যোমী তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রাজন আহমদ। ১৯৯৮ সালে জন্ম নেওয়া রাজন আহমদের বাবার নাম মো. খিজির মিয়া ও মাতার নাম রাজিয়া বেগম। বর্তমানে রাজন আহমদ সিলেট সরকারি কলেজে অর্থনীতি ২য় বর্ষে অধ্যায়নের পাশাপাশি ‘রাজন কৃষি খামার’ নামে একটি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলছেন। ইতোমধ্যে এই খামারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মাহদি ক্যাটল ফার্ম সফলতার সাথে যাত্রা শুরু করেছে। বর্তমানে তার ক্যাটল ফার্মে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন জাতের ২০টির অধিক গরু রয়েছে।
এই খামারের যাত্রার শুরু সম্পর্কে জানতে চাইলে উদ্যোক্তা রাজন জানান, ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা শেষ করার পর তার বন্ধুর বাবা ডা. আব্দুর রশীদ লুলু’র পরামর্শে সীমিত আকারে পারিবারিক ভাবে ২টি গরু নিয়ে যাত্রা শুরু করা। তারপর সময় গড়িয়েছি, আমি এগিয়েছি। যার ফলশ্রুতিতে আজকের আমার এই অবস্থান, আশারাখি ভবিষ্যতে আমি আমার কাজ দিয়ে আরো এগিয়ে যাবো। বর্তমানে তার এই খামারে তিনি ছাড়াও সার্বক্ষণিক দেখাশোনার জন্য একজন লোক নিয়োজিত রয়েছেন। তার অবর্তমানে তার বাবা এই খামার দেখাশোনা করেন। এর পাশাপাশি রাজন আহমদ যুক্ত আছেন সিলেটের অনলাইনে চারা বিক্রির অন্যতম বৃহৎ পোর্টাল ‘ট্রি ওয়ালা’র সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে।
অনন্য সুন্দর ও সৃজনশীল এই কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজন জানান, করোনা কালে মানুষের অনলাইন নির্ভরতা দেখে এবং গুনগত মানসম্পন্ন গাছের চারা মানুষের হাতে সহজে ও সাশ্রয়ী মূল্যে পৌছে দেবার উদ্দেশ্য যৌথ ভাবে ট্রি ওয়ালা’র শুরু।
কৃষিতে আগ্রহ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই উদ্যোক্তা জানান, ছোট বেলা থেকে কৃষির প্রতি তার বিশেষ দূর্বলতা রয়েছে। তাছাড়া, তার পূর্বপুরুষের পেশা কৃষি বিধায় সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগেনি। বর্তমানে তিনি উপরোক্ত কাজগুলো ছাড়াও বিভিন্ন জাতের সুগন্ধি ধান, শাক-সবজি ও পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন রকমের ফলের চাষ অব্যাহত রেখেছেন। এর পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের ‘আনোয়ারা ফাউন্ডেশনের’ সহায়তায় বিষমুক্ত সবজি ও ফল চাষে উদ্ধুদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তার কাজের মাধ্যমে এলাকার মানুষের সুদৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজন জানান, অদূর ভবিষ্যতে তিনি আলাদা একটি ডেইরী শেড করতে চান। তাছাড়া গরুর গোবর হতে জ¦ালানী যোগ্য বায়ো গ্যাস উৎপাদন করবেন। ইচ্ছে আছে টিস্যু কালচার প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি নার্সারী করার, অগার্নিক মাছ ও মুরগি উৎপাদন করার। তার স্বপ্ন কৃষির প্রতিটি ক্ষেত্রে বিচরণ করে বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক অর্জন এবং বাংলাদেশের কৃষির নববিপ্লবের অংশ হওয়া।
তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, তার মতো তরুণরা পড়ালেখার পাশাপাশি কৃষিতে এগিয়ে এলে বাংলাদেশ খাদ্যে পরিপূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে সোনার বাংলায় পরিণত হবে। এমন কৃষি প্রিয় মানুষের জন্য থাকলো অনেক অনেক শুভ কামনা ও ভালবাসা।