।।শেখ নাদীর শাহ্, খুলনা থেকে।।
খুলনার কয়রায় একই পরিবারের তিন সদস্যকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত হাবিবুল্লাহর মা কোহিনুর খানম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে গত মঙ্গলবার কয়রা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ২৪/২১।
সর্বশেষ পুলিশ হেফাজতে থাকা চার জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার ঐ মামলায় ৩ জনকে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শুনানী শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, কয়রায় বাগালী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মাজেদ গাজীর পুকুরে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। নিহতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। নিহতরা হলেন, বামিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ গাজীর পুত্র হাবিবুল্লাহ গাজী (৩৩), স্ত্রী বিউটি খাতুন (২৫) ও একমাত্র কন্যা মেধাবী শিক্ষার্থী হাবিবা খাতুন টুনি (১৩)। হাবিবুর পেশায় একজন দিনমজুর, স্ত্রী গৃহিনী ও একমাত্র মেয়ে হাবিবা খাতুুন টুনি ঘুগরাকাটী ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ৬ষ্ট শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিহত পরিবারের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘটনার দিন চার জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার ৩ জনকে আটক দেখিয়ে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আসাদুল ইসলাম ও ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন জানালে বিজ্ঞ বিচারক শুনানী শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আটকৃতরা হলেন, বামিয়া গ্রামের মৃত কওছার গাজীর পুত্র জিয়াউর রহমান জিয়া (৪১), কুদ্দুস গাজীর স্ত্রী সুলতানা (৩৮) ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ভাগবা গ্রামের মৃত্যু মোকছেদ আলী সরদারের পুত্র আঃ খালেক (৬৫) ।
এব্যাপারে কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রবিউল হোসেন জানান, হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
সর্বশেষ, উপজেলার ঘুগরাকাটী ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ঘুগরাকাটি বাজারে মেধাবী শিক্ষার্থী ও ক্লাস মনিটর হাবিবা সুলতানা টুনি ও তার বাবা-মা’কে স্বপরিবারে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিতপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে।