ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদকের বাসায় শিশু গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল আটটার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শাহজাহান রোডের একটি বহুতল ভবন থেকে পড়ে চা-শ্রমিকের সন্তান প্রীতি উরাং (১৫) নিহত হয়েছেন। তিনি ভবনটির নয়তলা থেকে পাশের দোতলা টিনশেডের ওপর পড়েন। প্রীতি ঐ ভবনের নয় তলায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজ করতেন। ঘটনার পর আশফাকুল হক এবং তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারসহ ছয় জনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে হক এবং খন্দকারকে আসামী করে মামলা করেন প্রীতি উরাং এর বাবা লোকেশ উরাং।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট একই বাসা থেকে পড়ে ৯ বছর বয়সী এক গৃহকর্মী গুরুতর আহত হন, এবং ঐ গৃহকর্মীর অভিভাবক সৈয়দ আশফাকুল হক, তানিয়া খন্দকার ও শিল্পী নামের এক মহিলার নামে মামলা করেন, কিন্তু অভিযোগ আছে আশফাকুল হক প্রভাবশালী সাংবাদিক হওয়ায় তখন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
চা-শ্রমিকেরা বাংলাদেশের সর্বাধিক অবহেলিত, নিপীড়িত এবং বঞ্চিত জনগোষ্ঠী। চা-শ্রমিকের শিশু সন্তানরা তাই প্রায়ই কঠিন এবং অনিরাপদ পরিবেশে শৈশবেই অর্থ উপার্জনে বাধ্য হন। এমতাবস্থায় চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি মনে করে প্রীতি উরাং এর মৃত্যু কখনোই দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে না। এই ঘটনায় গৃহকর্তার অবজ্ঞা এবং দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকান্ডের স্পষ্ট লক্ষণ দৃশ্যমান।
চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন, সমণ্বয়ক এস এম শুভ এবং আহবায়ক সবুজ তাঁতী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, অবিলম্বে প্রীতির রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। তদন্তকালীন সময়ে প্রীতির পরিবার যাতে প্রভাবশালী গোষ্ঠীর চাপের মুখে না পরে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রীতির পরিবারের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষমতার চাপে চা-শ্রমিক সন্তান প্রীতি উরাং এর মৃত্যু যাতে চাপা না পরে সে ব্যপারে চা-জনগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের জনগণকে সোচ্চার থাকার আহবান জানায় চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি। (বিজ্ঞপ্তি)