সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ। এবারও এই প্রতিষ্ঠানের ৪২জন শিক্ষার্থী দেশের ১৯টি সরকারি মেডিকেলে কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এরমধ্যে ২১জন মেয়ে এবং ২১ জন ছেলে রয়েছেন। গত রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০২৩-২৪ সেশনের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বিষয়টি জানা গেছে। জানাগেছে, গতবছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৫৫ জন, বুয়েটে ১৮জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৪জন ও দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসি কলেজের উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীরা চান্স পেয়েছিলেন।
কলেজ সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মুরারিচাঁদ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪শ ৪৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪শ৪৪ জন পাস করেন। আর জিপিএ-৫ অর্জন করেন ৩শ৬ জন শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে এবার ৪২ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
এরমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন – ইখতিয়ার রাহাত (১৭৫ তম)। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে – আহনাফ আকিফ মাহি (৩৩০ তম), সাবরিনা জামান ফাবিহা (৩৫৫ তম), সিদ্দিকা লিমা (৪৫২ তম)। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে – সাদিয়া সুলতানা (৭৯৬ তম), মাহফুজুর রহমান নোমান (৯০৪ তম), চমক চৌধুরী (১১৩৭ তম)। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে – রাইয়ান ইসলাম (৮২৪ তম), বিদিতা চক্রবর্তী (৮৬২ তম), তাসনিম লতিফ তাজিন (৮৮৪ তম), সায়ন্তি তুসি (৮৮৭ তম), জীবন আহমেদ (৯৩৪ তম), প্রবাল কান্তি দাস (১৭৩২ তম), সালমা আক্তার (১৭৫০ তম), তাসনিম খান (১৭৫৫ তম), আব্দুল করিম (১৯৩৫ তম), শ্রেয়সী চক্রবর্তী সৃষ্টি (৯৩৫ তম)। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে – প্রিয়ন্তি শিকদার (১৩২৬ তম)। বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে – তাসফিয়া কাদের রিফাত (২০৩০ তম), এহসানুল হক নাইম। রংপুর মেডিকেল কলেজে – ফারজানা সানজিদা (২৪৬৪ তম), মুনতাহা মেহজাবীন হীমা (২৫৫২ তম)। দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে – ফাহমিদা কাদের চৌধুরী (৩৩৫১ তম), অনামিকা দৃষ্টি (৩৩৯৭ তম), নিশাত আহমেদ (৩৪০৪ তম)। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে – মাহাথির মোহাম্মদ আবির। টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে – আবুল ফজল অমল (৩৯৬৯ তম), জেবা তাহসিন (৪৪৮৪ তম), শাহেদ আহমেদ স্বপন (৪৫৩৮ তম), নাদিরা আনজুম দিনা। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে – সিয়াম ইবনে মতিন (৩৯৯৩ তম)। গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে – মাহিন আল মাহবুব (৪৪০১ তম), পিণাক দ্যুতি সিনহা (৪৪৩৬তম)। নীলফামারি মেডিকেল কলেজে – নুসরাত জাহান সাদিয়া, জারিন তাসনিম অথৈ। মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজে – পলি সামন্ত (৪৭২৭ তম)। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে – তাহসিনা তাবাসসুম মোনা (৪৮২৫ তম)। রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে – গোলাম রাব্বি (৪৮৩০ তম)। নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজে – স্বরুপ দেব সুবিনয় (৪৯২০ তম)। সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে – ইকরাম হাবিব। হবিগঞ্জের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে – অর্পিতা রায় ও অভিজিৎ আচার্য্য।
এদিকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চান্সপ্রাপ্ত ও জাতীয় মেধায় ৩৫৫তম সাবরিনা জামান ফাবিহা বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ডাক্তার হওয়ার প্রবল ইচ্ছে। ২ বছর আগে আমার বড়বোনও এমসি কলেজ থেকে ওসমানী মেডিকেলে চান্স পেয়েছেন। এজন্য আমি মেডিকেল প্রিপ্রারেশন ছাড়া আর কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রিপ্রারেশন নেইনি। আমার প্রথম চয়েজ ছিল ঢাকা মেডিকেল আর দ্বিতীয় ছিল সলিমুল্লাহ মেডিকেল। আল্লাহর রহমতে আমি আমার দ্বিতীয় চয়েজেই চান্স পেয়েছি। আমি ডাক্তার হয় মানুষের সেবা করতে চাই।
মেধাবী ছাত্রী সাবরিনা জামান ফাবিহার পিতা অধ্যাপক মো. বদরুজ্জামান ও মাতা মোর্শেদা জামান সোহেলী। এবং অনলাইন পত্রিকা বালাগঞ্জ প্রতিদিনের প্রধান সম্পাদক মুহাম্মাদ শরীফুজ্জামান তার চাচা। সিলেট শহরের মেজরটিলা শ্যামলী আবাসিক এলাকায় তাদের বসবাস হলেও মূল বাড়ী বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের বশিরপুর মাষ্টার বাড়ী। ফাবিহার বড়বোন তাহরিমা জামান আজহাও বর্তমানে ওসমানী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত। এবং তার একমাত্র ভাই তাভীর মুহাম্মাদ জামান মাহী সিলেট এমসি কলেজে ইংরেজি অনার্সের ছাত্র।