মানুষের মৃত্যূপূর্ববর্তী শেষ দিনগুলোতে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে ইস্ট লণ্ড মসজিদের উদ্যোগে এক বিশেষ সেনিমার অনুষ্ঠিত হয়েছে । বুধবার (১৫ মে) লণ্ডন মুসলিম সেন্টারের চতুর্থ তলাস্থ সেমিনার রুমে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় ।
মুলত ইস্ট লণ্ডন মসজিদ, সেন্ট জোসেফ হসপিস ও ইস্ট লণ্ডন ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় । এতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারের শুরুতে সকলকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ইস্ট লণ্ডন মসজিদ এন্ড লণ্ডন মুসলিম সেন্টারের সিইও জুনায়েদ আহমদ।
সেমিনারের মুল বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন ইস্ট লণ্ডন মসজিদের প্রধান ইমাম ও খতীব শায়খ আব্দুল কাইয়ুম, বার্টস হেলথ এনএইচএস ট্রাস্ট এর হেড অব চ্যাপলেন্সি ইমাম ইউনুস দুধওয়ালা, কনালটেন্ট ডক্টর জর্জি অজবর্ণ, প্রধান নার্স এমা রভিনসন, ইস্ট লণ্ডন ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের এডভান্স কেয়ার প্লানার সাবিনা জাব্বার, সেন্ট জোসেফ হসপিসের ক্লিনিক্যাল নার্স স্পেশালিস্ট তাহমিনা আলী ও কম্পোশনেট কেয়ার কো-অর্ডিনেটর আয়ারুন চৌধুরী।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, একজন মানুষের জীবনের শেষগুলো খুবই গুরুত্বপুর্ণ। যখন কোনো মানুষ মৃত্যুর কাছাকাছি এসে পৌঁছে, ক্যান্সারের মতো দীর্ঘমেয়াদী দুরারোগ্য ব্যাধিতে চিকিৎসাধীন থাকা ব্যক্তিকে ডাক্তার মৃত্যূর একটি সম্ভাব্য সময় জানিয়ে দেয়, তখন ওই ব্যক্তির জীবনে অনেক কিছু করণীয় রয়েছে । তিনি যদি বাকশক্তিসহ স্বজ্ঞান থাকেন তাহলে নিজেই তাঁর ইচ্ছাগুলোর কথা বলে রাখা উচিত । বাকশক্তি হারিয়ে ফেললে কাগজে লিখে রাখতে পারেন। মনে রাখতে হবে, শেষ ইচ্ছাগুলো বাকশক্তি ও জ্ঞান থাকা অবস্থায় বলে রাখা জরুরী । কারণ কখন বাকশক্তি চলে যায়, জ্ঞান থাকেনা বলা যায় না। মুত্যুর পর দাফন কাফন কীভাবে হবে, মৃত্যূর সময় আপনাকে হাসপাতালে রাখা হবে, ঘরে রাখা হবে, নাকি হসপিসে রাখা হবে-এই বিষয়গুলো আপনি আপনার বাকশক্তি থাকা অবস্থায় ওসিয়ত করে যাবেন । মৃত্যূর পর আপনার জানাজা, দাফন-কাফন কোথায় হবে, আপনার ঘরবাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্স, সহায়-সম্পদ কিভাবে উত্তারাধিকারীদের মধ্যে বিলি-বন্টন করা হবে- বিষয়গুলো আপনি একজন আইনজীবীর মাধ্যমে ‘উইল’ তৈরি যেতে পারেন। আপনি উইলের মাধ্যমে সম্পদের একটি অংশ চ্যারিটিতেও দান করতে পারেন । তাহলে কবরে বসে বসে সাদাকায়ে জারিয়ার সাওয়াব পাবেন। নতুবা মৃত্যূর পর আপনার অনেক সহায়-সম্পদ রাষ্ট্রিয় মালিকানায় চলে যেতে পারে। রাস্ট্রের মালিকানায় সম্পদ চলে গেলে তা হয়তো কোনো অনৈসলামিক খাতেও ব্যয় হতে পারে। বক্তারা আরো বলেন, মৃত্যূ অনিবার্য। যেকোনো সময়ই আমাদেরকে মৃত্যূর মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষকরে দীর্ঘমেয়াদী রোগে অসুস্থ হলে চিকিৎসক আমাদেরকে মৃত্যুর একটি সম্ভাব্য সময় বলে দেন। তাই আমাদের জন্য প্রস্ততি গ্রহণ সহজ হয়। তাই মৃত্যূ নিয়ে কথা বলতে ভয় না করে অনিবার্য এই সত্যকে আলিঙ্গনের প্রস্তুতি সর্ম্পকে পরিবারের সদস্য ও চিকিৎসদের সাথে কথা বলা উচিত। জীবনের শেষযাত্রার সময়টুকু যেন পীসফুল বা শান্তিপুর্ন হয়।