আমরা যদি প্রত্যেকে শিক্ষার আলোর দ্বারা, ভালো কর্ম ও গুণের দ্বারা আমাদের আত্মা ও হৃদয়কে ভরে তুলি, তাহলে আমাদের দেশ, জাতি, সমাজ উপকৃত হবে। আর আমাদের কাছ থেকে হেরে যাওয়া লক্ষ লক্ষ শিক্ষাবিদ ও জ্ঞানীর নিবেদিত আত্মা শান্তি পাবে। আমাদের প্রজন্ম বাংলার দামাল-কামাল ছেলে-মেয়েরা কবির প্রজাপতির মত শিক্ষার আলো, জ্ঞানের আলোর স্রোতে পাল তুলে বাংলার আনাচে-কানাচে, গ্রামে-গঞ্জে-শহরে ঘুরে বেড়াবে। সোনার বাংলার মুক্ত মাণিকরা, বাংলার আকাশে বাতাসে তাদের- প্রকৃত জীবনের ঢেউ ছড়িয়ে দিয়ে মল্লিকা- মালতির মত আনন্দ উল্লাসে নেচে নেচে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে। সূর্যের আলো যেমন অন্ধকারকে দূর করে, তেমনি জ্ঞানের আলোয় মানুষের জীবনের অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও অন্ধকারকে দূর করে। সুতরাং আমাদের জীবন থেকে অন্ধকারকে দূর করার প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। তা না হলে আমরা দেশ, জাতি, সমাজ আরও অন্ধকারে নিমজ্জিত হব। পৃথিবীর বুকে শিক্ষায়-দীক্ষায়, অর্থনৈতিক উন্নত দেশগুলোর প্রতি তাকালে ও তাদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তাদের সমাজনীতি, মানবনীতি ও অর্থনীতির সাফল্য ঘটিয়েছে একমাত্র শিক্ষার মাধ্যমে। শিক্ষা-দীক্ষা ছাড়া যে কোন জাতি কিভাবে উন্নতি আশা করতে পারে?
শিক্ষাই হচ্ছে মানুষের একমাত্র শক্তি। আমরা পৃথিবীতে যে সমস্ত ক্ষমতা ও শক্তি বুঝি তা সব কিছুর উৎস শিক্ষা। শিক্ষা ছাড়া পৃথিবীতে কোন জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। শিক্ষা মানুষের মুনষ্যত্বের বিকাশ সাধন করে। জীবনে উন্নতি করতে হলে শিক্ষাকে সবচেয়ে মূল্যবান অলংকার স্বরূপ দেখতে হবে। আমাদের জীবনের দূর্ভোগ, অভাব-অনটন, নির্যাতন, শোষণ থেকে রক্ষা পেতে হলে একমাত্র বন্ধুরূপে শিক্ষাকে গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা বন্ধু আমাদেরকে আলো দিয়ে সমাজের নিপীড়িত অত্যাচার- অনাচার থেকে মুক্ত করে আলোর পথে নিয়ে আসবে। একমাত্র শিক্ষাই যে কোন জাতির মৌলিক অধিকার, আর তা যে কোন সমস্যার সমাধান করতে পারে। পৃথিবীতে মানুষের একমাত্র চোখই হচ্ছে শিক্ষা। আমরা যে চোখে দেখি তা প্রকৃত চোখ নয়। এই চোখ দিয়ে আমরা আমাদের নিজেদেরকেও ভালভাবে দেখতে পারি না। প্রকৃত চোখই হলো শিক্ষার চোখ। মানুষকে সভ্য করে তোলার একমাত্র চোখই হচ্ছে শিক্ষার চোখ। পৃথিবীর বুকে এমন কোনো শিক্ষা নেই যে তার শক্তি নেই, আর তার মূল্য বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। শিক্ষা ছাড়া মানুষ ভদ্র, নম্র, সহনশীল হতে পারে না। শিক্ষাই মানুষকে সহনশীল, ভদ্র, নম্র, সামাজিক, নীতিবান, সমাজ সেবক করে তুলে। তার প্রমাণ উন্নত পৃথিবী। জ্ঞানীদের জীবন আদর্শ ত্যাগ তিতিক্ষা আমাকের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা যদি ভেবে দেখি তা হলে বুঝার কোনো অবকাশ থাকবে না। শিক্ষার প্রদীপ এত ভাস্কর উজ্জ্বল শক্তিশালী ক্ষমতার অধিকারী, আলো প্রদীপের মত। আলোর প্রদীপ থেকে শত শত প্রদীপ জ্বালালে কমে না। ঠিক তেমনি শিক্ষার প্রদীপ থেকে শিক্ষা বিতরণ করলে কমে না। আমরা যদি আমাদের অর্থ-সম্পদ, ধন-দৌলত বিতরণ করি, দান করি, অবশ্যই কমবে। কিন্তু জ্ঞানের আলো শিক্ষা, মানুষকে যত দান করা যা, তত বাড়বে। জ্ঞানীরা সেতো আমাদের মত সাধারণ মানুষ ছিল না। তাঁরা অসাধারণ। শিক্ষায়-দীক্ষায়, জ্ঞানে-কর্মে, আলোর দীপ্তির মত পূর্ণ মানুষ।
শিক্ষার প্রধান গুণ হচ্ছে মানুষের সুন্দর চরিত্র গঠন করা। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্পদশালী- শক্তিমান একজন শিক্ষিত লোক, দুনিয়ার কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনা হয় না।
লেখক: আমেরিকা প্রবাসী সমাজসেবক