রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া উচিত: ইইউ রাষ্ট্রদূত



ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘পর্যাপ্ত সময়’ দেওয়া উচিত। তিনি জানান, ইউরোপের ২৭ রাষ্ট্রের জোট ইইউ এই প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।

সোমবার (৫ মে) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিকাব আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। তিনি জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ড, দায়ীদের বিচার, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ও আগাম নির্বাচনসহ সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে বক্তব্য দেন।

নির্বাচনের সময়সূচি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মাইকেল মিলার বলেন, “বাংলাদেশে কখন পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হবে, সে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশই নেবে। তবে তার আগে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া উচিত। এটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় সুযোগ এনে দিয়েছে এবং তা কাজে লাগানো দরকার।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো চাপ নেই। বরং আমরা চাই, এই সংস্কার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হোক, যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হয়।”

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের সংস্কারে ইইউ’র পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়ে মিলার বলেন, “আমরা আশা করি, সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে কাজ করে এই রূপান্তরকে এগিয়ে নেবে।”

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “এইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।”

রাখাইনে মানবিক করিডর বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। উভয় পাশেই মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। তবে নিশ্চিত করতে হবে, কেউ যেন বঞ্চিত না হয়।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ইউরোপে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তসহ যোগাযোগ করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় তিন থেকে চার বছর সময় লাগতে পারে।

ইইউ’র আমন্ত্রণে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের ব্রাসেলস সফর নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাষ্ট্রদূত বলেন, “দলটির আগ্রহেই ইইউ হেডকোয়ার্টারে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। শুধু জামায়াত নয়, বিএনপি, এনসিপি বা অন্য যেকোনো রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই আমাদের দরজা খোলা। আমরা দলগুলোর বক্তব্য শুনতে আগ্রহী।”

নারী সংস্কার কমিশন নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে আমরা নারী-পুরুষের সমান অধিকারে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশের মতো এখানেও নারীদের অগ্রগতি দেখতে চাই।”

অনুষ্ঠানে ডিকাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!