সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

নিউ ইয়র্কে বহুতল ভবনে গুলির হামলা, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ সদস্যসহ নিহত ৪



যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একটি বহুতল অফিস ভবনে ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারী এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক পুলিশ সদস্যসহ মোট চারজন নিহত হয়েছেন। সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মেয়র অ্যাডামস জানান, নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬) গত সাড়ে তিন বছর ধরে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে আসা একজন অভিবাসী। হামলার ঘটনায় মোট পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন।

বিবিসি জানায়, নিহত দিদারুল ইসলাম বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী বর্তমানে তৃতীয় সন্তানের মা হতে চলেছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা দিদারুলকে ‘বীর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ঘটনার সময় সন্দেহভাজন বন্দুকধারী একটি অ্যাসল্ট রাইফেল হাতে ম্যানহাটনের ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত একটি উচ্চতলা ভবনে ঢুকে গুলি ছোড়ে। এ ভবনে হেজ ফান্ড জায়ান্ট ব্ল্যাকস্টোন, কেপিএমজি, ডয়চে ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং আয়ারল্যান্ড কনস্যুলেট জেনারেলের অফিস রয়েছে।

                                                                            বন্দুক হাতে নজরদারি ক্যামেরায় দেখা যায় সন্দেহভাজনকে।

হামলাকারী ভবনে প্রবেশ করেই পুলিশের গুলিতে নিহত দিদারুলসহ চারজনকে হত্যা করে। পরে ৩৩তম তলায় ওই বন্দুকধারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, সে চারজনকে হত্যার পর আত্মহত্যা করে। সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর নাম শেন তামুরা (২৭)। তিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা এবং নেভাদা রাজ্যের ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী।

তামুরার গাড়ি থেকে একটি এম-ফোর রাইফেল, একটি রিভলবার ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে একটি স্পোর্টস কোট পরে, বড় রাইফেল হাতে ভবনে প্রবেশ করেন তিনি। পরে তার মৃতদেহ ভবনের ৩৩ তলায় পাওয়া যায়।

পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এক্সে (পূর্বে টুইটার) দেওয়া বিবৃতিতে জানান, বন্দুকধারী নিহত হয়েছে এবং ভবনটি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মেয়র অ্যাডামস এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘‘গুলিবর্ষণে একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, তাদের আঘাতের মাত্রা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’’

ঘটনার সময় এলাকাটি ছিল ব্যস্ত, মানুষ দোকান থেকে খাবার কিনছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা হঠাৎ গুলির বিকট শব্দ শুনে লোকজনকে দৌড়াতে দেখেছেন। একজন বিবিসি সাংবাদিক জানান, তিনি ঘটনাস্থলে একজন আহত ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে করে নেওয়া দেখেছেন, যার বুকে ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল।

এফবিআই জানায়, তারা নিউ ইয়র্ক ফিল্ড অফিসের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে সহায়তা করছে। এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেন তামুরার বিরুদ্ধে আগের কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। তবে লাস ভেগাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তার মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে তাদের কাছে নথি রয়েছে।

নিউ ইয়র্কের সিনেটর চাক শুমার এবং কার্স্টেন গিলিব্র্যান্ড এ ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। পুলিশের তদন্ত এখনো চলছে এবং হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন