অক্সফোর্ড গ্র্যাজুয়েট এবং ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ব্রিটিশ বাংলাদেশি ডাক্তার প্রফেসর নাজনিন রহমান লন্ডনের ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইসিআর) থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। এ বছরের অক্টোবর থেকে তা কার্যকর হবে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, গত ১২ বছর ধরে তার বিরুদ্ধে সহকর্মীদের উত্যক্ত, দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইংরেজি দৈনিক গার্ডিয়ানের সূত্রে প্রকাশ, আইসিআরের ক্যানসার গবেষণা বিভাগের টিমলিডার অধ্যাপক নাজনিন রহমানের বিরুদ্ধে হয়রানি এবং উত্যক্ত করার অভিযোগ তুলে সাবেক ও বর্তমান ৪৫ কর্মকর্তার সই করা একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এর জের ধরে গত বছরের নভেম্বরে তাকে সাময়িক ছুটি দেয় প্রশাসন।
চিঠিতে দাবি করা হয়, নাজনিন রহমানের ব্যবহার মানসিকভাবে ক্ষতিকর এবং মানুষের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেয়। চিঠিতে সই করা ৪৫ কর্মচারীর মধ্যে ২২ জনই সরাসরি তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। এতে কর্মস্থলে ভীতিসঞ্চার, বৈরিতা, অমর্যাদা ও অবমাননাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রয়েল মার্সডেন হাসপাতালের ২৩ জন বর্তমান এবং সাবেক কর্মচারীও তাঁর বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ আনেন।
গার্ডিয়ানের সাথে আলাপকালে ড. নাজনিন বলেন তিনি এবং তাঁর টিম এ প্রতিষ্ঠানে যা করেছেন তা নিয়ে তিনি গর্বিত। অভিযোগকারীরা এ রকম ভাবছেন দেখে আমি দুঃখিত। তিনি আরো বলেন, ‘তদন্তের পর আমার বিরুদ্ধে শাস্তি দেয়ার মতো কোন কিছু আসেনি। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত আমার এবং নিজেই সেটা নিয়েছি।’
উল্লেখ্য, ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসায় নাজনিন রহমানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি রয়েছে। স্তন, ডিম্বাশয় ও শিশুদের ক্যান্সারের জন্য দায়ী জিন শনাক্তে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। অধ্যাপক নাজনীন চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বহু স্বীকৃতি ও পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৪ সালে বিবিসি’র ‘ওমেন’স আওয়ার পাওয়ার’ তালিকায় বৃটেনের তৃতীয় সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলা হিসেবে নাজনিন রহমানকে তালিকাভুক্ত করা হয়। এক সময় এশিয়ান এচিভমেন্ট এওয়ার্ডও তিনি অর্জন করেন। ২০১৬ সালে মেডিকেল সাইন্সে অবদানের জন্যে সিবিই পদক প্রদান করা হয়। তাঁর আরেকটি পরিচয় তিনি একজন গীতিকার এবং সঙ্গীতশিল্পী। বাজারে তাঁর গানের নিজস্ব এলবাম রয়েছে।