যার ফলে কোন কর্মক্ষতা ছাড়াই লোকজন প্রবাসে যাচ্ছেন। সরকার বা ব্যক্তি উদ্যোগে এ নিকটবর্তী দু-উপজেলার মধ্যে কমপক্ষে একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করা এখন সময়ের দাবি। তাতে অত্র এলাকার বিশাল জনগোষ্টি উপকৃত হবেন এবং প্রবাসে গিয়ে এই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করতে সহয়তা হবে।
এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, সরকারের দিকে না থাকিয়ে শুধু ইচ্ছে করলেই প্রবাসীরা এই এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করছেন বিভিন্ন অনুন্নয়নশীল খাতে। দেখা যায় অধিকাংশ প্রবাসী কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছেন বিলাস বহুল বাড়ি। তবে গ্রেট ব্রিটেনে বাঙ্গালীদের গড়া সংগঠন বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাষ্ট দীর্ঘ দিন থেকে এলাকায় একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরীর উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তা উপস্থাপন করলেও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও সহযোগীতার অভাবে আজও তা করা সম্ভব হয়নি।
এলাকাবাসি মনে করেন, এই এলাকার অনেক প্রবাসীর বড় অংকের টাকা অলস ভাবে পড়ে রয়েছে। তারা যদি সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে এসে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরীর পাশাপাশি কোন ধরণের কল কারখানা তৈরী করেন তবে এলাকাবাসীর কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হবে। এ ছাড়া কাজ শিখে যারা প্রবাসে যাবেন তারাও উপকৃত হবেন। বালাগঞ্জ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে জানা যায় , বালাগঞ্জ উপজেলায় ৬টি এবং ওসমানীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে সহস্রাধিক বাড়ি আছে যা নির্মান করতে ব্যায় হয়েছে ২থেকে ৩ কোটি টাকা। যে বাড়ি প্রবাসীরা নির্মান করেছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগ বাড়িতেই রয়েছে তালা ঝুলানো। কোন কোন বাড়িতে অন্যান্য জেলার মানুষ থাকেন অথবা কাউকে দেখা শুনার জন্য রেখে যান প্রবাসী মালিকগণ । যিনি বাড়ি তৈরি করেন তিনি প্রবাস থেকে ৩-৪ বছর পর একবার বাড়িতে এসে মাস খানেক বসবাস করে পাড়ি জমান আপন কর্মস্থলে। তার পর বাড়িটি হয়ে যায় একেবারে বেকার।
এ জনপদের সচেতন মহলের মনে বিলাশ বহুল বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকের মতে এতো টাকা খরছ করে বাড়ি না বানিয়ে উৎপাদনমুখী কারখানা তৈরী করলে এর থেকে টাকা উপার্জনসহ নিম্নবিত্ত ও বেকার যুবকদের কাজ করার সুযোগ হতো। এতে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হতো। উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নে প্রবাসী সংখ্যা বেশি থাকায় এখানে আলিশান বাড়ির সংখ্যা ৫০টির উপরে। এসব প্রত্যেকটি বাড়ি বানাতে খরচ হয়েছে ১-২ কোটি টাকা। প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাষ্ট ইউ’কের ২০১০ সালের বৃত্তি বিতরণ আয়োজক কমিটির আহবায়ক শহীদ আবুল কালাম সেতুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা এ ব্যাপারে যতেষ্ট আন্তরিক। প্রয়োজনীয় সহযোগীতা ও সকলের আন্তরিকতা থাকলে এই উপজেলায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা অসম্ভব নয়। যুক্তরাজ্যস্থ প্রবাসী গহরপুর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্টাতা সভাপতি ও শিক্ষানুরাগী শাহনুর চৌধুরী বলেন, একমাত্র কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বেকারত্বের হাত থেকে মুক্তি দান করতে পারে। আমাদের এলাকায় অন্যান্য প্রতিষ্টান থাকলে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্টান না থাকায় আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আব্দাল মিয়া বলেন, ঐতিহ্যবাহী বালাগঞ্জ ও নব-গঠিত ওসমানীনগর উপজেলা বাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা এ অঞ্চলে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন সময়ের দাবি।