মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে নগরী থেকে বাদাঘাটে যাচ্ছে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার



সিলেট নগরের উপকণ্ঠে বাদাঘাটে নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে শুক্রবার (১১ জানুয়ারী) থেকে বন্দি স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু হবে। প্রথম দফায় শুধুমাত্র সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের এ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এম এমদাদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এর মাধ্যমে সিলেট নগর থেকে ২৩০ বছরের পুরনো কারাগার নগরের উপকণ্ঠ বাদাঘাটে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

জানা গেছে, শহরতলির বাদাঘাটে নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের লক্ষ্যে গত ৬ জানুয়ারি রোববার এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১১ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে নগরের ধোপাদিঘীরপারস্থ পুরাতন কারাগার থেকে বাদাঘাটে নবনির্মিত কারাগারে প্রথম দফায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দি স্থানান্তর শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় নেয়া সিদ্ধান্তের পরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

এরই মধ্যে পুরাতন কারাগারের প্রধান ফটকে নোটিশ সাঁটানো হয়। নোটিশে বলা হয়েছে, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক বন্দিদের সঙ্গে তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ সকলের সাক্ষাৎ কার্যক্রম ১০ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ওই তারিখ ছাড়া অন্যান্য দিনের সাক্ষাৎ যথানিয়মে চলবে।

সূত্রমতে, এরই মধ্যে কারারক্ষীসহ কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন কারাগারে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন। বন্দিদের জন্যে পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কারাগার। বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দির সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ জন। এর মধ্যে কয়েদি ৫০০ এবং হাজতি ১ হাজার ৮০০ জন।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা বলেন, বন্দি স্থানান্তর কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে ইতোমধ্যে কারাগার সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মহানগর পুলিশ বন্দি স্থানান্তরে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, ১৭৮৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকের প্রতিনিধি সিলেটের কালেক্টর জন উইলসন সিলেট নগরের ধোপাদীঘির পারে ২৪ দশমিক ৬৭ একর জায়গায় নির্মাণ করেন সিলেট কারাগার। এতে তৎকালীন এক লাখ রুপি ব্যয় হয়েছিল। কারাগার নির্মাণের বছর সিলেট জেলার জনসংখ্যা ছিল ৭৫ হাজার ৩৮২ জন। সময়ের ব্যবধানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্দির সংখ্যা বাড়তে থাকে। কারাগার নির্মাণের ২২১ বছর পর নগরের বাইরে বাদাঘাট এলাকায় কারাগার স্থানান্তরের উদ্যোগ নেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জানা গেছে, সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদাঘাটে নবনির্মিত আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মাণ করা হয়েছে ৬৪টি ভবন। এসব ভবনের মধ্যে বন্দিদের জন্যে নির্মাণ করা হয় ৭টি ভবন। এর মধ্যে পুরুষ বন্দিদের জন্যে ৪টি ও নারী বন্দিদের জন্যে ৩টি ভবন। পুরুষ বন্দিদের ৪টি ভবনই ছয়তলা বিশিষ্ট এবং নারী বন্দিদের জন্য ভবনগুলোর মধ্যে একটি চারতলা ও দুটি দোতলা ভবন রয়েছে।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!