বালাগঞ্জে রুকন ডেভেলপমেণ্ট ফাউন্ডেশন ইউকের উদ্যোগে উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের মুক্তারপুর (রুকনপুর) এলাকায় নির্মিতব্য আত-তাক্বওয়া এতিমখানা –হাফিজিয়া ও নূরানী মাদ্রাসা, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্র এবং বয়স্কদের জন্য বৃদ্ধাশ্রম প্রকল্পের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের মাটি ভরাটসহ দুটি রাস্তা নির্মাণ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ কাজ সম্পন্ন হয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও সমাজসেবী আলী আহমেদ নেছাওরের পারিবারিক উদ্যোগে গঠিত ‘রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’-এর অর্থায়নে ১শ ২০ শতক ভূমিতে প্রায় ৫কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসমূহ বাস্তবায়িত হচ্ছে। সোমবার (৪মার্চ) সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে এক বিশেষ দুয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের চেয়ারপার্সন- যুক্তরাজ্য প্রবাসী, বিশিষ্ট সমাজসেবী আলী আহমেদ নেছাওর মৌখক ও লিখিত বক্তৃতাকালে বলেন, রুকন ডেভেলপমেণ্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’র সকল কর্মকান্ড একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্ঠি অর্জনের জন্য। জীবনে চলে যাচ্চে এখন আমার বয়স ৭০ বছর। আজ যদি মারা যাই তবে আখেরাতের কি হবে? এই চিন্তা থেকে এ প্রতিষ্ঠান করার ইচ্চে জাগে। এখানে আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে-অসহায ও এতিমদেরকে বর্তমান সময়োপযোগী বিশ্বমানের শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে দক্ষ, নৈতিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এক পরিপূর্ণ মানুষ তৈরি করা। পাশাপাশি অসহায় বয়স্কদের জন্যও কিছু করা।
তিনি জানান, আত-ত্বাকওয়াএতিমখানা ও হাফিজিয়ামাদ্রাসা: অসচ্ছল পরিবারের সন্তানদের শিক্ষাদান প্রকল্প হিসাবে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। এই লক্ষে ছয়হাজার চারশত স্কয়ারফিটের একটি দু’তলাভবন নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই ভবনের রুমগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কাজে ব্যবহার করতে পারেন সেইব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নামাজের স্থান রাখা হবে। এতিম সন্তানরা এই ভবনে বসবাস করার উপযোগী নানা প্রয়োজনীয়সুবিধা থাকবে।
স্বাস্থ্য কেন্দ্র: স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য চিকিৎসা কাজে ব্যবহার করার একাধিক কক্ষ, যাতে সংকুলান হয় তার ব্যবস্থা থাকবে। এ জন্য প্রশিক্ষিত ডাক্তার, নার্স এবং প্রাথমি কচিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া চিকিৎসা সুচারু রূপে পরিচালনার জন্য নার্স এবং কেয়ারদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা থাকবে। বিশেষত ব্রিটেনে যে ভাবে কেয়ারার ট্রেনিংবা প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষ করে তোলা হয়, যাতে প্রত্যেক সঠিকভাবে সেবাদা নকরতে পারেন। এই প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা পরিচালনা করবেন ব্রিটেন থেকে গিয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও প্রশিক্ষকরা। এই প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্বারা অনুমোদিত থাকবে। স্মরণ রাখা যেতেপারে যে, এতে দেশের মধ্যে ছাড়াও বিদেশে চাকরি প্রাপ্তির সুযোগ্য দক্ষ কর্মী গড়ে তোলাও একটি অন্যতম লক্ষ্য।কারিগরিপ্রশিক্ষণ কেন্দ্র্র: কারিগরি শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির সংস্থান থাকবে। কম্পিউটার ল্যাব সহকারিগরি শিক্ষার উপকরণ থাকবে। যাতে এই সরঞ্জামাদি শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারেন।
এ ছাড়া শিশুদের খেলাধুলার জন্য ভবনের পাশে একটি মাঠা সংরক্ষণ থাকবে। পাশাপাশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধাশ্রমের জন্য আলাদা ভবন এই ভূমিতে নির্মান করা হবে। যেখানে মনের আনন্দে বয়বৃদ্ধরা বসবাস করতে পারেন। তাদের বিনোদন ধর্মীয় আরাধনার জন্য প্রশিক্ষিত সহযোগী লোক নিয়োজিত থাকবে। থাকা খাওয়াসহ স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনাতামূলক ব্যবস্থা থাকবে। তাই ফাউন্ডেশন পক্ষ থেকে দেশে এবং বহি বিশ্বে অবস্থানরত সবার দুয়া এবং সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এদিকে দুয়া মাহফিলে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, লেখক ও গবেষক আব্দুল হাই মশাহিদ, রুকনপুর জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা ইমদাদুল হক, মুয়াজ্জিন হাফিজ ইসহাক আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জিল্লুর রহমান জিলু, বর্তমান সহসভাপতি শাহ মো. হেলাল, সাংবাদিক এমএ কাদির, ইঞ্জিনিয়ার সায়িম মাহমুদ জনি, এলাকার মুরব্বি ও যুবকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- হাফিজ মাওলানা মকবুল আহমদ, মো. আবরুছ আলী, ইউনুস আলী, সুয়াইব আহমদ, আব্দুল মালেক, দুলাল আহমদ, ইসাক আলী ইমানী, ইসহাক আলী প্রমুখ। মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফিজ মাওলানা মকবুল আহমদ।