লন্ডনে বাংলা মিডিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব নির্বাচন সুসম্পন্ন হয়েছে। উৎসব মূখর পরিবেশে গত ২৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে ক্লাবের ১৫ টি পদের মধ্যে ১০টি পদে বিজয়ী হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে এমাদ-জুবায়ের প্যানেল।
লন্ডন সহ লন্ডনের বাইরের শহরের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ২টি শক্তিশালী প্যানেলের তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী সৈয়দ নাহাস পাশাকে ১২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন মোহাম্মদ ইমদাদুল হক চৌধুরী। সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশার মোট ভোটের সংখ্যা ১৫১ এবং মোহাম্মদ ইমদাদুল হক চৌধুরীর মোট প্রাপ্ত ভোট ১৬৩।
সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার কে পরাজিত করেছেন। মর্যাদার লড়াইয়ে তারেক চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ১৮৪, আব্দুস সাত্তার পেয়েছেন ১২৫ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ জুবায়ের ৭৯ ভোটের ব্যবধানে আনিসুর রহমান আনিছকে হারিয়ে পুণ: নির্বাচিত হয়েছেন। মোহাম্মদ জুবায়ের পেয়েছেন ১৯২ ভোট, আনিসুর রহমান আনিছ পেয়েছেন ১১৩ ভোট।
কোষাধ্যক্ষ পদে আবু সালেহ মোহাম্মদ মাসুম তার আগের অবস্থান ধরে রেখেছেন। তিনি আব্দুল কাদির চৌধুরী মুরাদকে ৯৩ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। সাবেক কোষাধ্যক্ষ আবু সালেহ মোহাম্মদ মাসুম পেয়েছেন ২০০ ভোট, আব্দুল কাদির চৌধুরী মুরাদ পেয়েছেন ১০৭ ভোট।
এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি পদে মতিয়ুর রহমান চৌধুরী হারিয়েছেন মোহাম্মদ সুবহানকে। মতিয়ুর রহমান চৌধুরীর ৫৩ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন গত বারের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সুবহানকে। মতিয়ুর রহমান চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ১৭৮ আর মোহাম্মদ সুবহান পেয়েছেন ১২৫ ভোট।
কমিউনিকেশন সেক্রেটারি হিসেবে এম এ কাইয়ুম হারিয়েছেন জাকির হোসেন কয়েছ কে। এম এ কাইয়ুম এর প্রাপ্ত ভোট ১৬৪, জাকির হোসেন কয়েছ পেয়েছেন ১৩৯।
ট্রেনিং এন্ড রিসার্চ সেক্রেটারি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইব্রাহিম খলিল মাত্র ৪ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি আহাদ চৌধুরী বাবু কে। পুন:নির্বাচিত ট্রেনিং এন্ড রিসার্চ সেক্রেটারি ইব্রাহিম খলিলের প্রাপ্ত ভোট ১৫৫, আহাদ চৌধুরী বাবু‘র প্রাপ্ত মোট ভোট ১৫১।
ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি সেক্রেটারি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আনোয়ার শাহজাহানকে হারিয়েছেন সালেহ আহমদ। আনোয়ার শাহজাহানের মোট প্রাপ্ত ভোট ১২৮ , সালেহ আহমদ পেয়েছেন ১৮০ ভোট। সালেহ আহমদ ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি সেক্রেটারি পদে পুন: নির্বাচিত হলেন।
ইভেন্টস এন্ড ফেসিলিটিজ সেক্রেটারি পদে আজহার ভুঁইয়াকে হারিয়েছেন রেজাউল করিম মৃধা। আজহার ভুঁইয়ার মোট প্রাপ্ত ভোট ১৩৫ , রেজাউল করিম মৃধা পেয়েছেন ১৭১।
নির্বাহী সদস্য পদে মোট ৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন মোট ১১ জন প্রার্থী। মোট ৬জন বিজয়ীর মধ্যে ৩ জন নারী বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন- আব্দুল কাইয়ুম ১৯১ ভোট, রুপি আমিন ১৬৫ ভোট, মো. এমরান আহমদ ১৫৭ ভোট, পলি রহমান ১৫৭ ভোট, নাজমুল হোসেইন ১৫৬ ভোট, শাহনাজ সুলতানা ১৪৭ ভোট।
বিলেতের বাংলা মিডিয়ায় দুই প্রবীন সাংবাদিক এর নেতৃত্বে এমাদ-জুবায়ের-মুরাদ ও নাহাস-আনিস-মাসুম প্যালেনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়েছেন অনেক প্রতিশ্রুতিশীল সংবাদকর্মী। নির্বাচনকে ঘিরে দুই টিম বিলেতের লন্ডন সহ উল্লেখযোগ্য প্রায় সবগুলো শহরে প্রেসক্লাব সদস্যের কাছে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা ছুটেছেন তাদের প্রতিশ্রুতি ও প্রত্যয় নিয়ে।
অবশেষে ২৭ জানুয়ারী রবিবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে সেরা চমক দেখিয়েছেন এমাদ-জুবায়ের-মুরাদ টিম। তাঁদের প্যানেলের সভাপতি,সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক,সহ সাধারণ সম্পাদক সহ বিজয়ী হয়েছেন মোট ১০ পদে । টিম নাহাস জিতেছে কোষাধ্যক্ষ সহ মোট ৫টি পদ।
লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবে এ বছর মোট ভোটার হচ্ছেন ৩১৮ জন। প্রার্থীদের অনেকে জানিয়েছেন প্রায় সব ভোটই কাস্ট হয়েছে।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব নির্বাচনকে ঘিরে ব্রিটেনের সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মুখে মুখে ছিল নির্বাচনী প্রচারনায় বিষয়টি। স্যোসাল মিডিয়াও চলেছে ব্যাপক প্রচারনা। অনেকে প্রিয় প্রার্থীর জন্য বিভিন্ন দেশ থেকেই মন্তব্য,প্রতিমন্তব্যে প্রচারনায় অংশ নেয়ার বিষয়টিও নির্বাচনী ডামাঢোলে যুক্ত ছিল। নির্বাচনকে ঘিরে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব ওয়াটসআ্যাপ গ্রুপটি প্রার্থীদের প্রচারনায় দিন রাত ক্লান্তিহীন সচল ছিল।