ছড়াকার জুসেফ খান এর পাঁচটি ছড়া ।
দেশের খাবার
পেট ভরে না পাস্তা, পিৎজায়
ফিস ফিলেট আর বার্গারে !
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর ফ্রাইড চিকেন,
কিছুই না আর মন কাড়ে !
চাইনা খাবার ইতালিয়ান,
চাইনা রে স্যুপ থাই !
মাছে-ভাতেই সব বাঙালি,
দেশি খাবার চাই ।
কোরমা, কাবাব, কোফতা হবে
বিরিয়ানিটা কাচ্চিতে !
ইলিশ পোলাউ, মুড়িঘন্ট,
বোরহানি, দই, লাচ্ছি তে !
সমুচা আর ডালপুরি চাই,
চটপটি চাই টক সাথে !
রুটি,পরোটা, মাংস কারি
চিংড়ি ভুনা চাই পাতে ।
শিক কাবাব আর হালিম হবে
রুই, বোয়ালের ফিস কারি,
আলু চপ আর পিয়াজুতে
খিচুড়িটা ঠিক দরকারি !
রসমালাই আর রসগোল্লায়
যতই করি মিষ্টি মুখ ,
জর্দা,পায়েস,সেমাই,ক্ষীর আর
পাটিসাপটায় ততই সুখ ।
ভিন্ন দেশের হাজার খাবার
কিন্তু জানো ভাই ,
সবার সেরা দেশের খাবার
তার তুলনা নাই !
বৈদেশিক মুদ্রা
ঢাকা থেকে টাকা আসে
দিল্লী থেকে রুপি !
চাচা থাকেন রাজধানীতে
ইন্ডিয়া তে ফুপি !
রিয়াদ থেকে চাচাতো ভাই
রিয়াল পাঠান দেশে !
হঠাৎ টাকা আসলে হাতে
দিন কেটে যায় হেসে ।
নিউইয়র্কের মামা বাড়ির
আসলে হাতে ডলার !
বাক্যহারা খুশির চোটে
নাইতো কিছু বলার ।
কুয়েত থেকে খালা,খালু
পাঠান যখন দিনার !
পাঁচতারাতে হয় অবকাশ,
ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার !
লন্ডনি ভাই পাঠালে পাউন্ড
কি যে লাগে ভালো !
পরিবারে তাই প্রবাসীরা,
সত্যিই তারার আলো !
সিলেট
শাহজালালের পবিত্র মাটি
পীর, আউলিয়া, সুফীর শহর,
কীন ব্রিজ আজো দাড়িয়ে আছে !
আলী আমজাদের ঘড়ি চলছে অষ্ট প্রহর।
স্রোতস্বিনী সুরমা বহে,
বহে স্রোতবহা কুশিয়ারা,
তামাবিল, জাফলং এর প্রস্তরশীলা,
মাধবকুন্ডের নৈসর্গিক ঝর্ণাধারা।
বিল, ঝিল, হাওর, বাওর
অতিথি পাখির মেলা,
বাঁশের সজ্জা শীতলপাটি
হরেক রঙ্গের খেলা !
শ্রীমঙ্গলের সবুজ চা এর বাগান
হরিপুরের প্রাচুর্য তেল, গ্যাস,
গারো, খাসিয়া, মনিপূরী,
আছে গোত্র,উপজাতি নানা বেশ।
আউল, বাউল, রাধা রমন
হাসন রাজার দেশে,
বীর ওসমানী অস্ত্র ধরেন
বীর বাঙ্গালীর বেশে ।
আপন দর্পে উদ্ভাসিত
ফুলে ফলে পুষ্পে ভড়া,
খোদার অশেষ রহম, কৃপায়
সিলেট শহর সবার সেরা ।
শব্দের তরজমা
‘রাগের’ মাঝে ক্রোধ আছে
রাগে’ শিল্পীর সুর,
এক ‘সন্দেশ’ খবর আনে
আরেক ‘সন্দেশে’ গুড় ।
এক ‘চলন’ প্রচলনে
আরেক ‘চলন’ যাওয়াতে,
তাড়া’ মানে তাগিদ আছে
‘তাড়া’ পেছন ধাওয়াতে ।
‘গাওয়া’ আছে গাওয়া ঘিতে
আরেক গাওয়া গানে,
এক ‘কদম’ এ এক পা হাটা
‘কদম’ ফুলের ঘ্রাণে ।
এক ‘ছড়া’ তো পানির ধারা
আরেক ‘ছড়া’ ছন্দে ভড়া,
‘বাজ’ সেতো শিকারী পাখি
বজ্রের ‘বাজ’ মাথায় পড়া !
শব্দ একই অর্থ অনেক
পাকায় মাথার চুল,
বলবো কথা অর্থ বুঝে
করবো না তো ভুল !
শীতের গোসল
শীত শীত লাগে শীত
কনকনে ঠানডা্ !
সিনানেই যত ভয়
যাবে নাকি জানডা !
কম্পন হাতে পায়ে,
কাঁপাকাঁপি শরীরে।
গোসলটা সারা হবে
ঘড়ি কাঁটা ধরিরে !
সহসটা বুকে নিয়ে
সুপার হিরো পাওয়ারে !
এই শীতে যেতে হবে
পুকুর আর শাওয়ারে।
আর যদি সিনান হয়
বালতি বা গামলায়।
লও ঠেলা নিজেতেই
কে বা ডর সামলায়।
মন চায় ধরি মাছ
না-ছুঁই পানিরে।
স্নান ঘরে যেতে ভয়;
শীতকালে জানি রে !
—————————-
অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে ছড়াকার জুসেফ খানের চতুর্থ ছড়াগ্রন্থ সোৎপ্রাস। বইটির প্রচ্ছদ ফটো এবং অলংকরণ করেছেন সিনাজ আনহু খান । ‘সোৎপ্রাস’ ছড়াগ্রন্থটি প্রকাশ করেছে বাসিয়া প্রকাশনী। মূল্য রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। বইমেলায় বাসিয়া প্রকাশনীর ৬৩৪ নম্বর স্টলে এবং রকমারি ডটকমে বইটি পাওয়া যাবে। সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সিলেট প্রথম আলো বন্ধুসভা কর্তৃক আয়োজিত ‘সিলেট বইমেলা’ এর বাসিয়া প্রকাশনী স্টল নং ০৩ হতে বইটি সংগ্রহ করে নিতে পারেন ।
লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থ : ছাইপাঁশ(২০১৬), খড়কুটো(২০১৭), রকমারি (২০১৮), সোৎপ্রাস (২০১৯)।