বালাগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রীকে নিজ গৃহের বারান্দা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত অধরা আসামিদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারকার্য সম্পন্ন করার দাবিতে জাস্টিস ফর তাহিয়া ইসলাম গহরপুর যুব সমাজ, গহরপুরের উদ্যোগে সিলেটে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট ও জেলা পরিষদের সামনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত হয়ে মানববন্ধনে একাত্বতা প্রকাশ করে সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক জনগণ।
মানবনন্ধনে জামেয়া ইসলামিয়া হুসাইনিয়া গহরপুর মাদ্রাসা, দেওয়ান আব্দুর রহিম হাই স্কুল এন্ড কলেজ, শিওর খাল খায়রুন নেছা মহিলা মাদ্রাসা, বড়জমাত ছমিরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়, নর্থ ইস্ট বালাগঞ্জ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত হয়ে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান। মানববন্ধন শেষে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারকার্য সম্পন্ন করার দাবিতে সিলেটর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি দেয়া হয়।
মানবন্ধনে বক্তৃতা করেন অ্যাডভোকেট জুয়েল আহমদ, সমাজ সেবক এনায়েতুর রহমার রাজু, হারুন মিয়া, আছলম খান, খালেদ মিয়া, ময়নুল হক, ছমির মিয়া, মাওলানা ফয়জুর রহমান, আব্দুল হামিদ, তজমুল আরী, শামীম আহমদ, রায়হান আহমদ, মাওলানা আব্দুস ছালাম, শাহীনুর পাশা, সিলেট
বিভাগ জনস্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাজিউল ইসলাম তালুকদার রাজু, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান জুনু ও যৌন নিপিড়ন বিরোধী শিক্ষার্থী জোটের আহবায়ক এবিএম মাহমুদুল হাসান সিদ্দিকী প্রমুখ।
মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, গণধর্ষণের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীর ভবিষ্যত নিয়ে তার পরিজন-পরিজন উদ্বিগ্ন রয়েছেন। পরিবারের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মেয়েটি শারীরিক ও মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার পড়ালেখাও বন্ধ রয়েছে। প্রতিবেশী কয়েকজন মিলে মেয়েটিকে নিজ ঘরের বারান্দা থেকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। স্থানীয় খয়রুন্নেছা মহিলা মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ১৩ বছরের ওই শিক্ষার্থীর মেডিকেল পরীক্ষায় গণধর্ষণের বিষয়টি সুষ্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। মেয়েটি নির্যাতনকারীদের চিনতে পেরেছে এবং তাদের নামও প্রকাশ করেছে। প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও অপরাধীদের ধরতে প্রশাসন তালবাহানা করছে। অভিযুক্ত ৪জনকে গ্রেফতার করলেও তাদের দেয়া জবানবন্দির বিষয়টি এখনো খোলাসা করা হচ্ছে না। এতে প্রতিয়মান হয় কার্য নিয়ে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতনকারী সকল অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে তাদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে উপজেলার শিওর খাল গ্রামের ৭ম শ্রেণীর ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে নিজ গৃহের বারান্দা থেকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে বাড়ির নির্জন স্থানে গণধর্ষণ করে প্রতিবেশী বখাটেরা। এই ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদি হয়ে বিগত বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে বালাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-৮। মামলায় ২ জনে নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করা হয়। প্রধান ২ আসামিসহ ইতিমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও আরো ২জন আসামির গ্রেফতার এখনো অধরা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে গণধর্ষণের সাথে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দা, সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসীদের উদ্যোগে দফায় দফায় প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অব্যাহত রয়েছে।