ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যারা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
প্রেসসচিব আরো জানান, নুসরাতের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নুসরাতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে ছাদে রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দিন রাতেই তাঁকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। হাসপাতালে পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বুধবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর।
১৮ বছর বয়সী রাফির সম্ভাব্য সর্বাত্মক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী; এমনকি উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি।
গত সোমবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নুসরাতকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলেছেন, নুসরাতকে বিদেশে নেওয়ার মতো অবস্থা নেই। কারণ তার দেহের ৮০ শতাংশ ঝলসে গেছে।’
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা গত ২৭ মার্চ যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি মাদরাসায় গেলে একদল মুখোশধারী তাঁকে মাদরাসার ছাদে ডেকে নিয়ে হত্যার জন্য তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরই মধ্যে মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।