মো. রেজাউল করিম মৃধা ।। গত ২৫ আগস্ট ২০১৯ সফল ভাবে অনুষ্ঠিত হলো লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সামার ট্রিপ ২০১৯। সকাল ৮.৩০ মিনিটে ইস্ট লন্ডন মসজিদের সামনে একে একে সকলে উপস্থিত হতে থাকেন। চলতে থাকে সালাম বিনিময়। দীর্ঘ দিন পর একে অপরের সাথে দেখার এক অন্য রকমের আনন্দ। আর সফরের গন্তব্য কাম্বার সান্ডস সি বিচ ।দুটি কোচে আগে থেকেই নির্ধারণ করা ছিল কে কোন বাসে উঠবেন। কে কোন বাসের দায়িত্ব পালন করবেন। কোচ এ – এর দায়িত্বে ছিলেন সভাপতি ইমদাদুল হক চৌধুরী , ট্রেনিং সেক্রেটারী ইব্রাহিম খলিল এবং ইভেন্ট সেক্রেটারী মো: রেজাউল করিম মৃধা।
কোচ বি – এর দায়িত্বে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জোবায়ের ও কমিউনিকেশন সেক্রেটারী এম এ কাইয়ুম। ট্রিপ এর স্থান কাম্বার সান্ডস সমূদ্র সৈকত। লন্ডন থেকে প্রায় দু ঘন্টার রাস্তা হলেও রাস্তায় প্রচন্ড ট্রাফিকের কারনে বেশ বিল্বব হলো। কিন্তু দুটি কোচেই ছিল গান ,কবিতা ও কৌতুকের প্রতিযোগিতা। বিজয়ী হবেন প্রতি কোচে তিন জন করে। নির্বাচনের জন্য প্রতি কোচে তিনজন করে বিচারকও নির্ধারণ করা হয়। কোচে কোচে মুখরিত হতে থাকে গান, আবৃত্তি ও কৌতুক । কেউ কার চেয়ে কম নয়। কে হবেন প্রথম দ্বিতিয় এবং তৃতীয়। এ ব্যাপারে বিচারকদের রায়ই ছিল চুড়ান্ত ।
কোচ এ বিজয়ীরা হলেন- ইফতেখার আহমেদ রনি, জিনাতআরা শারমিন, খিজির হায়াত খান কাউসার।
কোচ বি বিজয়ীরা হলেন- ওমর ফারুক, জিয়াউর রহমান সাকলাইন, আহমেদ ময়েজ।
এরই মাঝে কোচ দুটি এসে পৌঁছেছে। কিন্তু পার্কিং পাওয়াটা খুবই মুসকিল হয়ে পড়ে। লোকে লোকারণ্য সুমূদ্র সৈকত। অনেকটা রাস্তার ধারেই নামতে বাধ্য ।
কোচ থেকে নামার সাথে সাথেই সবার খাবার পরিবেশন করা হয়। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। আবার অনেকে তার পরিবার বন্ধুদের নিয়ে চাদর বিছিয়ে এক সাথে বসে খাচ্ছেন। সমুদ্রের ধারে মুক্ত বাতাসে কোচের এত সময়ের কষ্ট নিমিষেই উধাও হয়ে গেল।
খাবার শেষে সমুদ্রের ধারে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা, কিন্তু না ইভেন্ট সেক্রেটারির বাঁশীর হুইচালে সবাই জড়ো হতে লাগলেন এক স্থানে। কেন না এখানে চলবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা।
ফুটবল, হাডুডু, মহিলাদের হাঁড়ি ভাঙা, সাঁতার প্রতিযোগিতা এবং রশি টানা টানি। মহিলাদের হাঁড়ি ভাঙার আনন্দ দেখে পুরুষরা উৎসাহিত হলেন চোখ বেঁধে হাঁড়ি ভাঙার। ফুটবল খেলা শুরু হতে না হতেই সমুদ্রের জোয়ার আসতে শুরু করে। খেলা শেষ না করে রেফারী চ্যানেল এস এর হেড অব প্রোগ্রাম ফারহান মাসুদ খান ড্র ঘোষণা করেন। এর পর হাডুডু এতে কোচ বি বিজয়ী হয়। রশি টানাটানি এতে ও বিজয়ী হয় কোচ বি।
সাঁতার প্রোতিযোগিতায়- ফিরোজ আহমেদ বিপুল, এম এ হান্নান, জাকির হোসেন কয়েস এর আনন্দ ঘন প্রতিযোগিতা সকলে উপভোগ করেন।
এছাডা পুরুষদের হাঁড়িভাঙায় প্রথম হয়েছেন: মোহাম্মদ জোবায়ের, ২য় তাইছির মাহমুদ, তৃতীয় মোস্তফা কামাল মিলন।
মহলাদের হাঁড়ি ভাঙায় প্রথম জিনাত আরা শারমিন, ২য় হাসি খান, তৃতীয় সুজিয়া চৌধুরী।
ছিলো লটারীর মাধ্যমে ৫টি আকর্ষণীয় পুরুস্কার। ১ম: ফিরোজ আহমেদ বিপুল, ২য়: রানা হামিদ, ৩য়: মাহিদুর রহমান বাবলু, ৪র্থ: সারোয়ার হোসেন, ৫ম: নজরুল ইসলাম বাসন।
পুরস্কার বিতরণের পর এবার ফেরার পালা। সবাই যায় যার জিনিস পত্র নিয়ে উঠে আসেন সমুদ্র পার থেকে। তবে রয়ে যায় স্মৃতি। দিনটি যে সবাই উপভোগ করেছেন। বাসে উঠে যার যার সিটে বসে গেলেন সবাই। বাস ছুটে চললো লন্ডনের উদ্দেশ্যে। পড়ন্ত বিকেলের সূর্য ঢেলে পরছে সমুদ্রের রক্তিম আভায়। সবাইকে করে তুলছে মহা আন্দোলিত। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে সবাই যেনো কিছুটা ক্লান্ত। কিছুটা সময় বিরতির পর আবার শুরু হলো কৌতুক আর গান। কোচ চলে এলো ইস্ট লন্ডন মসজিদের সামনে। কোচ থেকে এক এক করে সবাই নামছেন আর লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের কর্মকর্তারা সবাইকে বিদায় জানাচ্ছেন।