ব্রিটেন সরকার বিলেতের বিদেশী ছাত্রদের জন্য আগামী বছর থেকে পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা চালু করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রী নেয়া যেকোন শিক্ষার্থী শিক্ষা শেষে দুবছর কাজ করার সুযোগ পাবে। তবে যেনতেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিলে চলবে না। যেসকল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী শিক্ষার্থী আনার ব্যাপারে ভাল রেকর্ড রয়েছে , কেবল সেসকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এই ভিসা পাবে।
২০১২ সালে পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা চালু হলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেসা মে এই ক্যাটাগরির ভিসা বন্ধ করে দেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ক্ষমতায় আসার কিছুদিন পরই থেরেসা মের সিদ্ধান্ত বাতিল করে আবার পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা চালুর ঘোষণা দেন স্বরস্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পাটেল।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও বিদেশী ছাত্ররা এই সিদ্ধান্ত কে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেনে ছাত্র আসার হার আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় সদ্য সাবেক বিশ্ববিদ্যালয়মন্ত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ভাই জ জনসন এ ব্যাপারে ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এই নতুন ভিসা নীতিতে ছাত্রদের ভিসা পাবার ব্যাপারে কোন সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া হয় নি এবং অর্জিত ডিগ্রি ছাড়াও যেকোন জায়গায় কাজ করতে পারবে । গত বছর বিলেতে প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজার বিদেশী ছাত্র বিলেতে পড়তে আসে এবং আগামী দশ বছরে বিদেশি ছাত্রের সংখ্যা ৬ লক্ষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
তবে এ ব্যাপারে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কমিউনিটি নেতৃবৃন্ধরা। গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল এর সহসভাপতি ও ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট আসহাব বেগ বলেন, বর্তমান ব্রিটিশ সরকারে সংকট চলছে। সরকার কতদিন থাকবে তা নিয়ে সবাই সন্দিহান । নতুন সরকার এলে পলিসি পরিবর্তন ও হতে পারে। এই ভিসা আগামী বছর থেকে চালু হবে। তাই আমাদের দেশ থেকে ছাত্র আসতে হলে এই সময়ের মধ্যে তাদের দক্ষ হতে হবে। ইংলিশ ভালো জানতে হবে, বিশেষ করে লিখিত ও মৌখিক ইংলিশ. যা তাদের এদেশে ভালো ডিগ্রির পাশাপাশি বিলেতে কর্মজীবনে সাফল্য আনতে ও সহাযতা করবে।
এ ব্যাপারে লন্ডনের স্টুডেন্ট কন্সালটেন্সি ফার্ম জিইসিসি এর কর্ণধার আখলাকুর রহমান জানান, আগামী বছরে থেকে যেকোন বিষয়ে ডিগ্রি নেয়া ছাত্ররা পোস্ট স্টাডি ভিসা পাবে। তবে সরকার বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি, গণিতসহ প্রমুখ বিষয়ে জোর দিচ্ছে কারণ এসব বিষয়ে এদেশে দক্ষ মানুষের অভাব রয়েছে।
বিলেতের বাংলাপোস্ট পত্রিকার সম্পাদক ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী বলেন, এই সরকারের পরিবর্তনের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। ছাত্রদের আসার ব্যাপারে পুরো কর্মপরিকল্পনা এখনো ঘোষণা করা হয়নি, তাই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা উচিত। তবে ব্রিটেনে ছাত্র হিসাবে আসতে হলে ইংলিশ ও বিজ্ঞানে দক্ষতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।