মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ১২০নং করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্রেণিকক্ষ ও আসবাবপত্র না থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ১৯৭৬ সালে ৩৩ শতক জায়গায় মাত্র তিনটি ক্লাসরুম নিয়ে স্থাপিত হয় এ বিদ্যালয়টি। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি এটি জাতীয়করণ করা হয়। তিনটি রুমে ছাত্র-ছাত্রী বসার জন্য মাত্র ২৫ জোড়া ব্রেঞ্চ থাকায় স্কুলের বারান্দায় কাপড় টাঙ্গিয়ে চলে শিশু শ্রেণির ক্লাস। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ভবনটি সংস্কারের অভাবে জনাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের কক্ষ সংকট থাকায় শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের শৌচাগারটি এক ধরনের ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য প্রবাহের যুগেও আজ পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ে কোন ল্যাপটপ বা কম্পিউটার পৌঁছায়নি। এবং নাই আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোন শিক্ষক।
গত ২৫ জানুয়ারি (শনিবার) সকালে স্কুল পরিদর্শনকালে দেখা যায় স্কুলটি জেলা সড়কের নিকটবর্তী হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং স্কুলের সীমানা সংরক্ষণের জন্য কোন প্রাচীন দেয়াল এখনো নির্মাণ করা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা রয়েছেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। ভবনটিও এক ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভবনের ছাদ ও ভিমের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল রেখা দেখা দিয়েছে। স্কুলের সামনের খেলাধুলার মাটিও অনেক নিচু। ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত জায়গা নেই বললেই চলে। নির্মাণাধীন শহীদ মিনার আংশিক বিদ্যমান থাকতে দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের কোন অফিস রুম না থাকায় পরিকল্পনামাফিক ভবনটি কোন এক সময় দুতালা করা হবে প্রকৌশলীদের এমন সিদ্ধান্তে রাখা দোতালায় ওঠার সিঁড়ি রুমে স্কুলের অফিস রুম হিসেবে ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংরক্ষণ করতে গিয়ে বিঘ্ন ঘটছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাংশু রঞ্জন পাল এ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে জানান, বিগত পাঁচ বছর যাবৎ সমাপনী পরীক্ষায় এ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ফাইভ অর্জনসহ একাধিক বৃত্তি পেয়ে আসছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। ধর্মীয় শিক্ষকসহ মোট পাঁচ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন এ বিদ্যালয়টিতে।বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল হান্নান বলেন, পাঠদানের কক্ষ সংকট থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কক্ষে গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্থানীয় কাউন্সিলর দেওয়ান আব্দুর রহিম মুহিন বলেন, বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম তালুকদার মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং একটি নতুন ভবন নির্মাণের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। তিনি আরো জানান যে সকল স্কুলে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই সে সমস্ত স্কুলের তালিকা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই এই স্কুলে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার পৌঁছে যাবে।