আবুল কাশেম অফিক।। দীর্ঘদিন থেকে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে বালাগঞ্জ বাজারের প্রধান সড়কের পুরাতন থানার সম্মুখে মারাত্মক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে হাল্কা বৃষ্টি হলেই বাজারের ভিতরের সড়কের এই অংশটিতে প্রায় হাটুসমান নর্দমার পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। ফলে নর্দমার পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে হাঁটতে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সদাই করতে বাজারে আসা হাজার হাজার পথচারীদের কাপড়-চোপড় নষ্ট হয়ে যায়। তাদেরকে নাজেহাল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এ নিয়ে তাঁরা নিয়মিত অসন্তোষ ও প্রকাশ করছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, বালাগঞ্জ বাজারের প্রাণকেন্দ্র পুরাতন থানা সংলগ্ন সড়কের পাশাপাশি মদনমোহন মার্কেট,পূবালী ব্যংক, ডাকঘর, সাবরেজিস্টার অফিস, কাজী অফিস ও বালাগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মাঝ বরাবর মারাত্মক গর্তের সৃস্টি হয়ে নর্দমার পানিতে কাদাজলে একাকার। ওই স্থানে দুরবস্থার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
গত প্রায় ৫/৬ বছর যাবত বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের ওই অংশে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে ওই সড়কের পুরাতন থানা রোডের অংশে সীমাহীন দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত সড়কে নর্দমার পানি ও কাদাজলে একাকার হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম আসলে বড় বড় গর্তের কারণে জলাবদ্ধতায় পথচারী, ছাত্রছাত্রী, ক্রেতা-বিক্রেতাদের চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সড়কে চলাচলকারী যানবাহন, যাত্রী এবং পথচারীরা এ অবস্থায় মারাত্মক হয়রানীর মধ্যে পড়েছেন। উক্ত স্থানে গর্তের কারণে প্রায় সময় বাজারের মধ্যে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় বিভিন্ন মালামাল নিয়ে বড় ট্রাক আসলে চাকা বেধে গিয়ে আটকে থাকতে দেখা যায়। বাজারে চলাচলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ীরাও অব্যাহত লোকসানের মধ্যেও পড়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন।
বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল মুনিম, বালাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো: জুনেদ মিয়া, সাবেক সভাপতি মাখন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো: কাওছার আহমদ কওছর, সদর ইউনিয়নের কুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত, অটোরিক্সা (সিএনজি) শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, কাপড় ব্যবসায়ী রমিজ আলী, নিখিল দাস, ইউনুছ মিয়া, দর্জি ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান, ফার্মেসি ব্যবসায়ী মো: সাইফুল ইসলাম, মো: আব্দুল হামিদ, আলীম মোবাইল গ্যালালীর সত্ত্বাধিকারী আব্দুল আলীম, জনতা ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী মখদ্দস আলী প্রমুখ আলাপকালে জানান, বাজারের অগ্রগতি, উন্নয়ন ও ব্যবসায়ী সহ সর্বস্তরের মানুষের স্বার্থে জরুরী ভিত্তিতে বাজারের উল্লিখিত সড়ক সংস্কার, ড্রেন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও মসজিদের নিয়মিত মুসল্লী মাওলানা সৈয়দ আলী আসগর, ইমাম সমিতির বালাগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হোসাইন আহমদ মিসবাহ, বালাগঞ্জ বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও বালাগঞ্জ আদর্শ মহিলা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ছাদ উদ্দিন, শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুল বাতিন, মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা আব্দুল আলী, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কাজী শিরাজুল ইসলামদ্বয় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আল্লাহর ঘর মসজিদের সামনের রাস্তা এরকম খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে তা মেনে নেওয়া যায়না। এই মসজিদ বালাগঞ্জের প্রধান জামে মসজিদ, এই মসজিদে প্রতি ওয়াক্তে শত শত মুসল্লিরা নামাজ পড়তে আসেন। মুসল্লিরা প্রতি ওয়াক্তে নামাজে আসতে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পরতে হয়। বিশেষ করে ওই স্থানের অপবিত্র ময়লাযুক্ত পানিতে মুসল্লিদের কাপড়চোপড় নষ্ট হওয়ার ফলে মসজিদে মুসল্লীর সংখ্যা আগের চেয়ে কমে গেছেন।
তাছাড়াও পাশাপাশি মাসজিদের অজুখানার উপরে কাজী অফিসও রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে কাজি অফিসে আসা লোকজন অনেক সময় বিব্রতবোধ করেন।
বালাগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি মসজিদের নিয়মিত মুসল্লী প্রবীণ দলিল লেখক জমশেদ আলী ও বর্তমান সভাপতি আব্দুর নুর বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এই অবস্তার কারণে এখানকার মানুষ মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করেছে,পাশাপাশি আমরা নামাজে যাওয়ার পথে অনেক সময় ময়লাযুক্ত পানিতে কাপর-চোপর নষ্ট হওয়ারও পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিক্ষক,শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে ওই সড়ক সংস্কার, ড্রেন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।