অবশষে বৃটেন ও ইইউর মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য নিয়ে চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। ১০মাস ধরে ব্যাপক দর কষাকষি ও বাক বিতণ্ডার পর আজ বহুল আলোচিত এই বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা হয়েছে। ঐতিহাসিক এই ঘোষণাটি আসে লণ্ডন সময় বিকেল ৩টায়। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন আজ ও গতকাল এ নিয়ে বিস্তর কথা বলেছেন।
২০১৬ সালের গণভোটের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি ইইউর সঙ্গে বৃটেনের দীর্ঘ ৪৫ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটছে। এই চুক্তির ফলে অতীত সম্পর্কের অনেক কিছুই হয়ত বদলে যাবে, কিন্তু বন্ধুত্ব টিকে থাকবে।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বরিস জনসন বলেছেন, জনসাধারণকে ২০১৬ সালের গণভোটের সময় এবং গত বছর সাধারণ নির্বাচনের সময় যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, তা এই চুক্তির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা আমাদের অর্থ, সীমানা, আইন, বাণিজ্য এবং আমাদের মাছ ধরার জলের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিয়েছি। এই চুক্তি যুক্তরাজ্যের প্রতিটি অংশে পরিবার এবং ব্যবসায়ের জন্য দুর্দান্ত খবর। আমরা শূন্য শুল্ক এবং শূন্য কোটার ভিত্তিতে প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। বরিস জনসন আরো বলেন, এই চুক্তি আমাদের ইউরোপীয় বন্ধুদের সাথে রফতানিকারকদের আরও বেশি ব্যবসা করার অনুমতি দেবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালের পর প্রথমবারের মতো আমরা আমাদের জলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সহ একটি স্বাধীন অবস্থান নিশ্চিত করেছি।
অপর প্রেস ব্রিফিংয়ে মিসেস ভন ডার লেন বলেছেন, আমরা শেষ পর্যন্ত একটি চুক্তি করতে পেরেছি। এটি একটি দীর্ঘ এবং ঘুরে বেড়ানো রাস্তা ছিল। তবে যথেষ্ট শ্রম দিয়ে উভয় পক্ষের জন্য আমরা ন্যায্য এবং ভারসাম্যপূর্ণ সমতায় পৌছেছি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্রেক্সিট বিষয়ে সমন্বয়ক মিশেল বার্নিয়ার আলোচনায় সার্বিক সহায়তার জন্য সকল রাজনীতিবিদ, নাগরিক এবং এমনকি সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বৃটেনের প্রধান আলোচক লর্ড ফ্রস্ট বলেছেন, আমি খুব সন্তুষ্ট এবং গর্বিত যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে আজকের দুর্দান্ত চুক্তিটি নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্যের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছি। উভয় পক্ষই রেকর্ড সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম ও বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তি অর্জনের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে সফল হয়েছি।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত গণভোটে বৃটেনের মানুষ ইইউ জোট ছাড়ার পক্ষে মত দেয়। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে গত ৩১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে পৃথক হয় বৃটেন। ঘোষণা অনুযায়ী সেদিন রাত এগারটায় এ বিচ্ছেদ কার্যকর হয়। তবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ট্রানজিশনাল পিরিয়ড।