যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী কারী ইন্ড্রাস্ট্রির বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাটার্রাস এসোসিয়েশন (বিসিএ) বর্ণাঢ্য আয়োজনে ১৬তম বিসিএ এওয়ার্ড প্রদান করবে। অনুষ্ঠানটি আগামী ৩০ অক্টোবর, রোববার লণ্ডনের বিখ্যাত পার্ক প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। কারী ইন্ড্রাস্ট্রি নিয়ে বিসিএ’র ধারাবাহিক কাজের প্রেরণা ও সাফল্যগুলোকে ক্যাটারার্স ও কারী লাভার্সদের হৃদয়ের আরও কাছে নেয়ার লক্ষ্যে এবারের এওয়ার্ড এর শ্লোগাণ হচ্ছে— সেলিব্রেটিং সাকসেস এণ্ড ইন্সপায়ারিং আদারর্স।
এওয়ার্ড কে সামনে রেখে ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার লণ্ডনের হ্যার্মাস স্মিথ এণ্ড ওয়েস্ট লণ্ডন কলেজে ৩০ জন শেফ এর অংশ গ্রহণে ‘শেফ অফ দ্যা ইয়ার’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শতাধিক প্রতিযোগির মধ্য থেকে যাচাই-বাচাই করে সরাসরি কুকিং প্রতিযোগিতায় ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর থেকে রেষ্টুরেন্ট ও টেকওয়ের প্রতিযোগিরা অংশগ্রহণ করেন।
লাইভ শেফ কুক অফ বিসিএ — ব্রিটেনে বাংলাদেশী কারী ইন্ড্রাস্ট্রির একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা। ব্রিটেনের অভিজ্ঞ শেফ এবং ক্যাটারার্সরা এই প্রতিযোগিতা থেকে সেরা ১০ জন শেফ বাচাই করে থাকেন। যেখানে শেফদের উদ্ভাবিত নানা পদের মৌলিক ডিস এবং এর সৃজনশীল উপস্থাপনা সর্বোপরি কারী শিল্পের সাথে জড়িত রেষ্টুরেন্ট কর্মীদের অনুপ্রাণীত করতে বিসিএ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। প্রতিযোগিতায় ছিল মাছ, শাক-সবজি ও বাংলাদেশী ঐতিহ্যিক সুগন্ধি ফলের ফিউশন কারী । এছাড়াও খাবারের দাম, নাম ও সৃজনশীল উপস্থাপনায় ছিল মেধা ও অভিজ্ঞতার ছাপ। ‘লাইভ শেফ কুক অফ বিসিএ’ থেকে সেরা দশজন বিজয়ীর নাম বিসিএ’র ১৬তম এওয়ার্ড অনুষ্ঠানে সেলিব্রেটি ও বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা ও প্রদান করা হবে।
বিসিএ ‘শেফ অফ দ্যা ইয়ার’ এওযার্ড কমিটির প্রধান আতিক রহমান বলেন, ৬০ বছরের প্রাচীন সংগঠনের অতীতের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা ও মেধার সমন্বয়ে আমাদের প্রচেষ্টা — বাংলাদেশী কারী শিল্পের ব্রান্ডিং, সেরামান এবং কোয়ালিটি খাবার উপহার দেবার মতো শেফদের খুজে বের করে তাদেরকে আনুষ্ঠানিক পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে তুলে ধরা। এবারের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে— প্রতিযোগি শেফরা বয়সে তরুণ এবং নতুন চিন্তাধারার। বাংলাদেশী ঐতিহ্যকে ধারণ করে অনেকগুলো ডিশ কারী ইন্ড্রাস্ট্রিতে যুক্ত হবে বলে আমরা আশাবাদি।
বিসিএ‘র প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম ওবিই বলেন, ১৬তম এওয়ার্ড অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে বিসিএ কারী ইন্ড্রাষ্ট্রির বিবদমান সমস্যা এবং সম্ভাবনার একটি মৌলিক বার্তা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদেরকে অবহিত করতে চায়। ব্রেক্সিট ইস্যু ও করোনা পেন্ডামিকে বাংলাদেশী কারী ইন্ড্রাস্ট্রি মারাত্মক সংকট মোকাবেলা করে স্টাফ সংকট নিরসনে বহুমুখী কার্যক্রম করছে।তিনি বলেন, লাইভ শেফ কুক অফ বিসিএ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দক্ষ শেফ তৈরী এবং তাদের উদ্ভাবিত ডিসগুলো মূলধারায় তুলে ধরার পাশাপাশি ব্র্রিটেনের রেস্টুরেন্টগুলোতে ‘স্কিল্ড স্টাফ’ তৈরীতেও সকলকে অনুপ্রাণীত করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
বিসিএ সেক্রেটারী জেনারেল মিটু চৌধুরী বলেন, সেরা শেফ বাচাই প্রতিযোগিতাটি কারী ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য মর্যাদাকর ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ। একটি অভিজ্ঞতালব্দ টিমের সমন্বয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাচাই করে ৩০ জন প্রতিযোগিকে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতার জন্য সিলেক্ট করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস বিসিএ‘র ‘শেফ অফ দ্যা ইয়ার’ প্রতিযোগিতা থেকে কারী ইন্ড্রাস্ট্রিতে যুক্ত হবে বহুমাত্রিক নানা স্বাদ,পদ ও মানের নতুন ডিশ ও সেরা মানের শেফ।
এওয়ার্ড কমিটির কনভেনার মুজিবুর রহমান ঝুনু বলেন, কারী ইন্ড্রাস্ট্রির স্টাফদের কাজের মূল্যায়ন এবং মেইন স্ট্রিমে সাফল্যগুলোকে তুলে ধরতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে বিসিএ। বিসিএ এওয়ার্ড অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কারী ইন্ড্রাস্ট্রির প্রতিবাবান শেফদের খুজে বের করে তাদেরকে অনুপ্রাণীত করছে।
বিসিএ এর হেড শেফ আতিকুর রহমান বাংলাদেশী ক্যুজিন এর বৈচিত্রময় ও শেফদের মৌলিক রন্ধনশৈলীর প্রতিযোগিতা পরিচালনা করে। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসাবে ছিলেন গ্লোবাল এম্বেসেডর এর একসিকিউটিভ শেফ চানাকা ফারনান্দ, ওয়েস্ট লণ্ডন কলেজ এর ফুড সার্ভিস লেকচারার সীলভিয়ান ফারগার, ওয়েস্ট লন্ডন কলেজ এর ফুড লেকচারার শেফ বোব ও সার্ভিস ইন্ড্রাস্টি বিভাগের হেড ডেনিস, মলসন-কোরর্স কোবরা এর গ্লোবাল ডাইরেক্টও সামসন সোহেল, কিং ফিশার এর রাজন।
বিসিএ’র ডেপুটি সেক্রেটারী হেলাল মালিক ও এনইসি মেম্বার আতাউর রহমান লায়েক এর প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিসিএ প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম ওবিই, সাবেক প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিই,কামাল ইয়াকুব, পাশা খন্দকার এমবিই, সেক্রেটারী জেনারেল মিটু চৌধুরী, বিসিএ এওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আহ্ববায়ক মুজিবুর রহমান ঝুনু, সাবেক সেক্রেটারী জেনারেল ওলি খান এমবিই, সহ সভাপতি মেহেরুল ইসলাম, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারী ফরহাদ হোসেন টিপু, কালচারাল সেক্রেটারী নাসির উদ্দিন, মেম্বারশীপ সেক্রেটারী ইয়ামিন দিদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিচারক ও অতিথিবৃন্দ প্রতিযোগী শেফদের উপস্থাপিত মৌলিক ডিশ, স্বাদ ও সৃজনশৈলীর প্রশংসা করে বলেন, এরকম প্রতিযোগিতা বাংলাদেশী কারী শিল্পের ব্রাণ্ডিং তৈরীতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।