বালাগঞ্জ উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি উপজেলা সমন্বসভায়ও এ অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অবশ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছেন।
অভিযোগসূত্র ও প্রচারমাধ্যম থেকে জানাযায়, মো. আব্দুর রহিম দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে বালাগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসে সহকারি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। দীর্ঘদিন এক জায়গায় থাকার সুবাদে বানিয়েছেন অর্থের পাহাড়। অফিসের একমাত্র সর্বেসর্বা তিনি। কেউ তার বিরুদ্ধে গেলে অর্থের লোভ দেখিয়ে মীমাংসা করা যেনো তার চিরাচরিত এক অভ্যাস। চলতি বছরের আগস্ট মাসে বিভিন্ন ভূয়া বিল-ভাউচার তৈরী করে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন আব্দুর রহিম।
তিনি সপ্তাহে দু`এক দিন এক মহিলাকে নামমাত্র টাকা দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে পরিচ্ছন্নতার নাম করে প্রতি মাসে ৯ হাজার টাকা করে বিল তুলেছেন। কম্পিউটার, মনিটর, বিদ্যুৎ, চেয়ার, আলমারি, স্টাম্প, সীল ইত্যাদি ক্রয় না করে মোটা অংকের বিল উত্তোলন করেছেন এই কর্মকর্তা। তার স্ত্রী-সন্তানাদি সিলেটে বসবাস করেন। তিনি সেখানে যাতায়াত করতে ব্যবহার করেন সরকারি গাড়ী এবং গাড়ীর তৈলের বিল উত্তোলন করে আসছেন মাসের পর মাস।
নিজ স্ত্রী যদিও যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নয়। তারপরও প্রশিক্ষক দেখিয়ে মোটা অংকের বিল উত্তোলন করেন এই কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, যুব উন্নয়ন থেকে ঋণ তুলে পরিশোধ করেন না এই দম্পতি। কর্মস্থলে সপ্তাহে দু`একদিন অফিস করেন রহিম। সেবা গ্রহীতরা ফোন দিলে নিজ বাসায় থেকে তিনি জানান – অফিসের বাইরে, ফিল্ডে, ব্যাংকে, জেলার মিটিংয়ে রয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অক্টোবর উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বালাগঞ্জ যুব উন্নয়ন সহকারী কর্মকর্তা আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারিয়া হকের উপস্থিতিতে- বালাগঞ্জ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাপ্তাহিক বালাগঞ্জ বার্তার সম্পাদক শাহাব উদ্দিন শাহিন উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি বিষয়টি তুলে ধরেন। এ সময় বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন সামস, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রজত চন্দ্র দাস ভুলনসহ একাধিক জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ বিষয়টির তদন্তপূর্বক শাস্তির দাবী জানান।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম সংবাদিকদেরকে বলেন, আমার কোনো ভুল নেই। সব অভিযোগ মিথ্যা। সরকারি কাজে গাড়ী ব্যবহার করি তেলের খরচ আমি দেই, অফিসও দেয়।
আলাপকালে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক যুব উন্নয়ন সহকারী কর্মকর্তা আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তদন্ত পূর্বক অভিযোগ প্রমানিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।