রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক অনন্য ব্যক্তিত্ব ডিআইজি এস এম রোকন উদ্দিন



জনসেবা ও দায়িত্বের প্রতি নিষ্ঠাবান অনন্য এক ব্যক্তিত্ব নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের (কমান্ড্যান্ট) ডিআইজি এস এম রোকন উদ্দিন। যুক্তরাজ্য প্রবাসী মানবাধিকার কর্মী রেজওয়ান আলী কয়েছ -এর সফর সঙ্গী হিসেবে বিগত ২১ জানুয়ারি এই গুনীজনের সাহচর্য লাভের সুযোগ হয়। অবশ্য এর আগে মানবাধিকারকর্মী রেজওয়ান আলী কয়েছ এর মুখে এই পুলিশ অফিসারের গুণকীর্তন শুনে কাছে যাবো ইচ্ছে জাগে। অবশেষে সান্নিধ্য পেয়ে এই মহীরুহ ব্যক্তিত্বকে মনে হল শান্ত, সৌম্য স্বভাবের প্রাজ্ঞ পুরুষ। চলনে-বলনে, নম্রতায়, আন্তরিকতায় অতিসহজেই তিনি মানুষকে আবিষ্ট করতে পারেন। অবশ্য তিনি শুধু একজন সুদক্ষ পুলিশ অফিসারই নন, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) নোয়াখালীর আধুনিক রুপকার, বহু সংগীতের রচয়িতা, সুরকার ও গীতিকারও বটে ।

ছবিতে বা থেকে: সাংবাদিক এস এম হেলাল, ডিআইজি এস এম রোকন উদ্দিন ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী মানবাধিকারকর্মী রেজওয়ান আলী কয়েছ।

জানাগেছে, তিনি প্রায় ৫বছর যাবত পিটিসি নোয়াখালীতে কর্মরত আছেন। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তাঁর নিখুঁত পরিকল্পনায় বাস্তবায়িত অন্যতম কর্মকান্ড হচ্ছে – কদম চত্বর, ছায়াবিথী মহিলা সিঁড়িঘাট, জল জোছনা, বাতাম সত্ত্বর, কৃত্রিম লেক, বিসমিল্লাহ গ্যারেজ, প্যারেড মাঠ, ভিআইপি গ্যালারী, প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা সমূহ। পাশাপাশি পিটিসির আঙ্গিনায় – হরেকরকম ফুল ও ফলের বাগান দেখলে মনে হয় এটা যেন একটি দৃষ্টিনন্দন পার্ক।

অন্যদিকে তাঁর সুপরিকল্পিত সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিতব্য বিশাল দু-তলা বিশিষ্ট নান্দনিক পিটিসি জামে মসজিদ, ঈদগাহ ও গেইট এবং অত্যাধুনিক অযুখানা, মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের হৃদয় জুড়িয়ে যায়।এই গুণী ব্যক্তিত্ব ১৯৬৬ সালের ১০ নভেম্বর বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানায় জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর গর্বিত পিতার নাম নূর মুহাম্মদ শেখ। ১৯৯৬ সালে পাবনা জেলায় সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু। এরপর তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিশনাল কমিশনার, চট্রগ্রাম পুলিশের এডিশনাল ডিআইজির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি পিটিসি নোয়াখালীর (কমান্ড্যান্ট) ডিআইজি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

নোয়াখালী পিটিসিতে একরাত-একদিন তাঁর সান্নিধ্যে বেশভালো লেগেছে। তাঁর অপার প্রাণশক্তি, অদম্য ইচ্ছাশক্তি, উন্নত মানুষ হয়ে ওঠা, উন্নত মানুষ গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ বিস্ময় জাগায়, অনুপ্রাণিত করে তোলে। প্রজ্ঞা ও নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্বের অধিকারী এই পুলিশ অফিসার যেন হাজারও প্রাণের আলোর এক উজ্জ্বল বাতিঘর। আমি আশাবাদী তাঁর মহৎকর্ম ইতিহাসে তাঁকে অমরত্ব করে রাখবে অগণিত মানুষের হৃদয়ের গহীনে।আলাপচারিতায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী মানবাধিকার কর্মী ও মসজিদের অন্যতম দাতা সদস্য রেজওয়ান আলী কয়েস জানান, ১৯৯০ সালের এখানে পুরাতন সেই মসজিদটি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) নোয়াখালী জামে মসজিদ নামে পরিচিতি হয়। বর্তমানে মুসল্লীদের নামাজের স্থান সংকুলান না হওয়ায় মহান আল্লাহর অশেষ মেহের বানীতে পিটিসি নোয়াখালীর বর্তমান কমান্ড্যান্ট ডিআইজি এস এম রোকন উদ্দিন মহোদয়ের একান্ত উদ্যোগে গত ০৪/১০/২০১৯ ইংরেজি সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মসজিদের পিছনের পুকুরটি সম্পূর্ণ ভরাট করিয়া সেখানে পিটিসি জামে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এবং পরবর্তী মসজিদের সামনের স্থানে ঈদের জামাত ও জানাজার নামাজের স্থান ধার্য করা হয়। গত ০২/১২/২০১৯ তারিখে বর্তমান মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। বর্তমান জনবল অনুযায়ী পিটিসির সকল স্তরের কর্মকর্তা / কর্মচারী, প্রশিক্ষণার্থী এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী ব্যক্তিবর্গের আর্থিক সাহায্য সহায়তায় অন্ততপক্ষে তিন হাজার মুসল্লির নামাজ পড়ার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক মানে নির্মাণশৈলী ও শিল্প মানের তিন তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট মসজিদ কমপ্লেক্স ১ম ও ২য় তলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে, শুকুর আলহামদুলিল্লাহ।সমাজসেবার অংশ হিসাবে মসজিদের চত্বরে এলাকাবাসীর জন্য ঈদের নামাজ ও জানাজার নামাজ আদায় ও লাশ গোসল ও সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মানুষ চাইলে কি না করতে পারে, আল্লাহর মেহেরবানী ও একজন রোকন উদ্দিন, উনার আপ্রাণ চেষ্টায় এই মসজিদটি একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ।

আমাদের গুরু রোকন উদ্দিন বাংলাদেশ পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নীতিবাদী ও সাথে একজন সমাজসেবক। আমার কাছে উনি একজন মানবতার উজ্জ্বল নক্ষত্র। আল্লাহ পাক উনাকে শুস্থতার সাথে দীর্ঘজীবী করুন। দুনিয়া ও আখেরাতে আরও সফলতা দান করুন।

সরেজমিনে পরিদর্শনকালে – ডিআইজি এস এম রোকন উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম ট্রেনিং সেন্টার নোয়াখালী এটা। এ প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৬০ একক জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে পুলিশের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলদের ৬ মাসের বেসিক প্রশিক্ষণ, এএস আই, এসআই এবং ওসিদের ইন সার্ভিস প্রশিক্ষণ নিয়মিত হয়ে থাকে। এখানে আমাদের স্টাফ আছে প্রায় ১৭০ জন। আর আমরা যখন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করি তখন ডেপুটেশনে আরও ১শ২০জন প্রশিক্ষক বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন। এ প্রতিষ্ঠানটি বলতে গেলে অনেকটাই অবহেলিতই ছিল। আমি বিগত প্রায় ৫বছর ধরে এখানে আছি। এ সময়ের মধ্যে আমি এবং আমার সহকর্মীরা চেষ্টা করছি একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে।আমাদের প্রশিক্ষণ, নৈতিক শিক্ষা ও সেই সাথে দৃষ্টি নন্দন মনোরম প্রশিক্ষণ হিসেবে গড়ে তুলতে যা-যা দরকার আমরা সরকারের এবং ব্যক্তিগত উভয় উদ্যোগে প্রচেষ্ঠা চালিয়ে গেছি। আলহামদুলিল্লাহ এখানে দেখতে পারছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং উপভোগ্য নানা স্থাপনা আমরা করেছি আমাদের স্ব উদ্যোগে এবং নিজস্ব প্রচেষ্ঠায়। যার ফলে অত্র অঞ্চলের কয়েকটি জেলার মধ্যে এই জায়গা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।

অনেক লোক এখানে দেখতে আসে, প্রচুর তদবির হয় আমার কাছে ভিতরে তারা আসবে। এবং আমাদেরও ভাল লাগে যে আমাদের প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে তাই মানুষ দেখতে আসে, এনজয় করে। নোয়াখালীতে কোনো মেহমান আসলে অবশ্যই তারা পিটিসি দেখিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। এখানের আমার ষ্টাফরা সবাই খুশি, আমিও সন্তুষ্ট, মোটামুটি আমরা এভাবে চেয়েছি এ প্রষ্ঠানটিকে গড়ে তুলতে।আপনি দেখেছেন, আমাদের এখানে কদম চত্বর, ছায়াবিথী মহিলা সিঁড়িঘাট, জল জোছনা, বাতাম সত্ত্বর, কৃত্রিম লেক, সংযোগ সড়ক গুলো, ইন্টারনাল রাস্তাগুলো, মেইন রুড, দৃষ্টি নন্দন আমাদের মসজিদ এবং মসজিদের সামনে পাবলিকদের জন্য ঈদের জামাতের ঈদগাহ, বিভিন্ন স্থাপনা সমূহ। আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ আমাদের সেই সুযোগ দিয়েছেন এজন্য আমরা মহান আল্লাহপাকের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!