মুসলিম একজন স্কলার একটি সভায় আলোচনা করছিলেন। হঠাৎ তিনি সামনে থাকা ওডিয়েন্সকে জিজ্ঞেস করে বসলেন;
বলুন তো দেখি, “সেদিন কোন দিন যেদিন—কেউ কারো দিকে তাকানো তো দূরের কথা বরং একে অন্য থেকে পালাতে থাকবে। ভাই ভাই থেকে…”
শাইখের কথা শেষ হবার আগেই অল্প বয়সী ছেলে ‘তালাত’ হাত উঠালো উত্তর দিতে। শাইখ তাকে ইশারা করলেন উত্তর দিতে।
তালাত বলল : দিনটি হবে “রামাদ্বানের দিন, সময় হবে ঠিক ইফতারের সময়!”
ওডিয়েন্স হেসে উঠলো।
সিগনিফিকেন্স :
শাইখের প্রশ্ন ছিল ক্বিয়ামাত দিবস নিয়ে। যার বিভীষিকার নমুনা কুরআনুম মাজীদের ৮০ নাম্বার সূরার ৩৩ নাম্বার এবং তার অধস্তন আয়াত সমূহে চিত্রিত করা হয়েছে।
কিন্তু পশ্চিমা ছেলে তালাত।
বিশ-বাইশ ঘন্টা দীর্ঘ সাওম পালন শেষে যখন ইফতার সজ্জিত টেবিলের পাশে অন্যান্য ভাই বোনদের সাথে বসে পড়ে তখন সে দেখে কেউ কারো দিকে যেন তাকায় না। বরং সবাই যেন মাগরিবের ক্ষণগণনা শুরু করে দেয়।
ঐ সময়টাতে সবাই অবসন্ন দেহ, বিবর্ণ বদন, ক্ষুধিত জঠর এবং পিপাসার্ত টুঁটি নিয়ে কেউ কারো দিকে দৃকপাত না করে বরং নির্লিপ্ত ভাবে স্বীয় অভিপ্রায় নিয়ে ব্যাপৃত থাকে। সামনে বিন্যস্ত ইফতারি অথচ স্বকীয় আত্মনিয়ন্ত্রণে সবাই যেন শৃঙ্খলাবদ্ধ।একমনা চেয়ে থাকে সাজানো ইফতারের পানে।
সেই সময়ের অদ্ভুত অনুভবের ভাবনা ‘তালাত’ অনায়াসে তুলে ধরেছে শাইখের প্রশ্নের উত্তরে।
ক্ষুদে তালাতের ক্ষুদ্র উত্তরের আবরণে সে দৃশ্যই স্পষ্ট হয়েছে।
তাঁর উত্তর আর বর্ণিত দৃশ্যের অন্তরালে আরো নিগূঢ় দৃশ্যের দর্শন আছে আমাদের জন্য। আর তা এ রকম ;
অবুঝদের কাছে হয়ত ইফতারের এ দৃশ্য নির্বোধ ও হাস্যকর। আবার শয়তানের কাছে এ দৃশ্য জ্বালা ও বেদনার। কিন্তু রাহমানের কাছে বান্দাদের এ ত্যাগের দৃশ্য—বড্ড সুখের। বড্ড খুশির।
তাই এ ত্যাগে কিন্তু আশীর্বাদ আছে।