।।আনসার আহমদ উল্লাহ, লণ্ডন থেকে।।
আলতাব আলীর স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে এবং বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাঙালি সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক সংগ্রামকে চিহ্নিত করে প্রতিবছর ৪ মে লণ্ডনে আলতাব আলী দিবস পালিত হয়। এ বছরও দিনটিতে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে একটি স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবিতা পাঠ এবং আলতাব আলী ও বর্ণবাদী সহিংসতার শিকার অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এক মিনিট নীরবতার পর বাঙালি কমিউনিটি ও বর্ণবাদ বিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা তাদের বক্তব্যে বাঙালিদের বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামের আন্দোলনকে স্মরণ করে এবং সকলকে সমতার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
কালচার এণ্ড রিক্রিয়েশন লিড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন – টাওয়ার হ্যামলেটসের স্পিকার জাহেদ চৌধুরী, ইকুয়ালিটি এন্ড সোশ্যাল ইন্ক্লুজন কাউন্সিলর সুলুক আহমেদ, কাউন্সিলর বদরুল চৌধুরী, বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার হযরত আলী খান, আলতাব আলী ফাউন্ডেশনের আকিকুর রহমান এবং আলতাব আলী ট্রাস্টের রফিক উল্লাহ, আকলাকুর রহমান ও হালিমা ইদ্রিস, স্ট্যান্ড আপ থেকে শীলা ম্যাকগ্রেগর, জুইশ সোসালিষ্ট গ্রুপের ডেভিড রোজেনবার্গ এবং টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্টারফেইথ ফোরাম থেকে সুফিয়া আলম।
পার্কের অনুষ্ঠানের পর অংশগ্রহণকারীরা বাঙালি সম্প্রদায়ের প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্বেষণে একটি প্রদর্শনী দেখার এবং চ্যানেল ৪ এর ডকুমেন্টারি ‘ডিফিয়েন্স’-এর স্ক্রীনিংয়ের জন্য ব্র্যাডি আর্টস সেন্টারে চলে যান। স্বাধীনতা ট্রাস্টের কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট জুলি বেগম, আলতাব আলী ফাউন্ডেশনের আকিকুর রহমান এবং ডিফিয়েন্সের সিরিজ ডিরেক্টর সতীয়েশ মনোহারাজাকে নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় । প্যানেলের সভাপতিত্ব করেন লণ্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির ডা. লায়লী উদ্দিন।
১৯৭৮ সালের ৪ মে গার্মেন্টস শ্রমিক ২৪ বছরের আলতাব আলীকে হত্যা করা হয়। তিনি তার কাজ শেষ হওয়ার পরে বিকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। হোইটচ্যাপেলের এডলার স্ট্রিটে তাকে তিন বর্ণবাদী যুবক ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। তাকে স্থানীয় হোইটচ্যাপেল হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডে পর বাঙালিরা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন।