সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুস্থ-সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে বিবেকানন্দ হোমিও হল।। আনিসুল আলম নাহিদ



বিবেকানন্দ হোমিও হলের ৫০ বছর পূর্তিতে আনোয়ারা পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। লেখক- হোমিও চিকিৎসক আমার আব্বা আনোয়ারা হোমিও হল এবং আনোয়ারা ফাউন্ডেশন-এর কর্ণধার জনাব আব্দুর রশীদ লুলুর হাত ধরে একেবারে ছোটবেলা থেকেই বিবেকানন্দ হোমিও হলে আমার যাতায়াত। সে সুবাদে কাছে থেকে দূরে থেকে বিবেকানন্দ হোমিও হল এর কর্ণধার ডা. বীরেন্দ্র চন্দ্র দেবের অনেক বিষয়-আশয় দেখার সুযোগ হয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, ফটোগ্রাফি, কৃষি, গ্রন্থাগার পরিচালনা প্রভৃতি বিষয়ে কাজের ব্যস্ততায় ওদিকে যাতায়াত কম হলেও আঙ্কেল প্রায় নিয়মিত আমার খোঁজ-খবর রাখেন এবং বইপত্র উপহার দেন। উল্লেখ্য, বিবেকানন্দ হোমিও হলের কর্ণধার বর্ষীয়ান চিকিৎসক ডা. বীরেন্দ্র চন্দ্র দেব পরিচিতির শুরু থেকেই আমার আঙ্কেল।

বিবেকানন্দ হোমিও হলে চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের আনাগোনা। এর কর্ণধারেরও চিকিৎসা পেশার বাইরে বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ। বিচিত্র বিষয়ের মধ্যে ২টি বিষয় আমার বেশ কৌতুহল উদ্রেক করেছে। বলাবাহুল্য, এ ২টি বিষয়ে আমারও আগ্রহ প্রবল। এর একটি হলো কৃষি এবং অন্যটা বই। বিবেকানন্দ হোমিও হলের বাইরে সবসময়ই থাকে ফুল-ফল, শাক-সবজির চারা। যেগুলো এর কর্ণধার বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন, সযত্নে পরিচর্যা করেন এবং বিনামূল্য বিতরণ করেন। টেবিলে অন্যান্য বিষয়ের সাথে শাক-সবজি, ফুল-ফলের বীজও থাকে। যেগুলো আগ্রহীদের হাতে নিজ থেকে সযত্নে তুলে দেন।

আমাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান আনোয়ারা এগ্রো ভিশন-এর বছরব্যাপী ফল চাষ উৎপাদন প্রকল্পে লাগানো আছে তাঁর দেয়া চারা ও বীজ। যেগুলো এখন তরতর করে বেড়ে তাঁর কীর্তিগাথা বহন করছে। এছাড়াও আছে তাঁর দেয়া অনেক ফুল ও শাক-সজ্জির চারা ও বীজ। চারা এবং বীজ দিয়েই শেষ নয়, রোপিত চারা এবং বীজের তিনি খোঁজ-খবর রাখেন এবং বিশেষ করে পাড়া-পড়শিকেও ফুল-ফল, শাক-সবজি চাষে অনুপ্রাণিত করতেও অনুরোধ করেন।
কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্যের জন্য অর্গানিক শাক-সবজি, ফল-মূল গ্রহন এবং নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টিতে শহরে থেকেও ডা. বীরেন্দ্র দেব নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

আনোয়ারা এগ্রো ভিশন উৎপাদিত ফল-মূল, শাক-সবজি সময়-সুযোগে তাঁকে প্রদান করা হয়। এগুলোর তিনি যেভাবে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন, তাতে আমরা এ বিষয়ে আরো নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে উজ্জীবিত হই। উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসহ কৃষির সবকটি শাখায় ক্রমান্বয়ে বড় কিছু করতে আনোয়ারা এগ্রো ভিশন জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এবার আসি বইয়ের প্রসঙ্গে, বিবেকানন্দ হোমিও হলের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান দেব লাইব্রেরি। এখানে চিকিৎসা বিষয়ক বইয়ের পাশাপাশি বিচিত্র বিষয়ের বই বিক্রি করা হয়। ক্রয়ের পাশাপাশি এখানে বইপ্রেমীরা ইচ্ছে মতো বই ঘাটাঘাটি করতে পারেন। বিশেষ করে আমাদের জন্য এ দ্বার সবসময়ই উন্মুক্ত।
এ ছাড়াও বিবেকানন্দ হোমিও হল থেকে আরো দু’ভাবে বইপ্রেমীদের সেবা প্রদান করা হয়। এর একটা হলো সরাসরি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বই উপহার দেয়া, আরেকটা হলো বই ধার দেয়া। আনোয়ারা হোমিও হল গ্রন্থাগার ও আর্কাইভ এবং রাজীব স্মৃতি গ্রন্থাগারের জন্য এখান থেকে আমরা বিভিন্নভাবে অনেক বইপত্র সংগ্রহ করেছি।

এই ভার্চুয়াল যুগে বই পাঠে মানুষকে উৎসাহিত করা তথা জ্ঞাননির্ভর সমাজ বিনির্মাণে বিবেকানন্দ হোমিও হল তথা এর কর্ণধারের নিরবে-নিভৃত অবদানও কৃষি আন্দোলনের মতো প্রশংসনীয়। কৃষি ও গ্রন্থাগার আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আমি এসব কর্মপ্রচেষ্টার উত্তরোত্তর সাফল্য ও অগ্রযাত্রা কামনা করি।

লেখক: আনিসুল আলম নাহিদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক- আনোয়ারা এগ্রো ভিশন, দেওয়ান বাজার, গহরপুর, বালাগঞ্জ, সিলেট।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!