তবে দায় স্বীকার করলেও তারাই যে হামলা করেছে তার কোনো প্রমাণ সংগঠনটি দেয়নি। এদিকে শ্রীলঙ্কা প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান উইজারডিন জানিয়েছেন, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতেই শ্রীলঙ্কা গির্জা, হোটেলসহ কয়েকটি স্থানে বোমা হামলা করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান উইজারডিন দেশটির পার্লামেন্টে বলেছেন, প্রাথমিকভাবে তদন্তে পাওয়া গেছে, নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতেই রোববার শ্রীলঙ্কার গির্জা ও হোটেলে বোমা হামলা করা হয়েছে। তবে প্রতিমন্ত্রীও তার এই দাবির পক্ষে যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত ও জামায়াতুল মিলাতু ইব্রাহিম নামে দুইটি ইসলামিক চরমপন্থি সংগঠন এই হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এর আগে সোমবার বোমা হামলার দায় স্বীকার করে জামায়াত আল-তাওহীদ আল-ওয়াতানিয়া নামের একটি গোষ্ঠী।
রুশ সংবাদমাধ্যম তাস’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার আল আরাবিয়া টিভি চ্যানেল এক টুইট বার্তায় এ কথা জানায়। তবে জামায়াত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া নামের ওই গোষ্ঠী সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়টি চ্যানেলটি। এ বিষয়ে শ্রীলঙ্কা সরকারের দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে এর আগে হামলার ঘটনায় দেশটির `ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত’ বা এনটিজে নামক একটি চরমপন্থী ইসলামি সংগঠন দায়ী বলে ধারণা করে শ্রীলঙ্কার পুলিশ। তাদের ধারণা, ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো যারা ঘটিয়েছে তাদের বড় অংশ একটি এই উগ্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত। এই গোষ্ঠীটি স্থানীয়ভাবেই তাদের তৎপরতা চালায় বলে বলা হচ্ছে।
দেশটি জানায়, স্থানীয় এই গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক এক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সহায়তায় এ সিরিজ হামলা চালিয়েছে। দেশটির তদন্তকারীরাও এই গ্রুপটির বিষয়ে বিশেষভাবে তদন্ত করছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ও বিশ্লেষকদের ভাষ্য, এনটিজে গ্রুপটি ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী ধ্যানধারণা লালন করে। সংগঠনটি ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপকে সমর্থন করে বলে জানা যাচ্ছে। তবে এনটিজেও হামলার দায় স্বীকার করেনি।
রোববার ইস্টার সানডের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানী কলম্বো ও তার আশপাশে গির্জা ও হোটেলে সবমিলিয়ে আটটি বিস্ফোরণে ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এসব হামলায় ৫শ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
ইস্টার সানডে উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা রোববার সকালে গির্জায় প্রার্থনা করার সময় শ্রীলঙ্কা রাজধানী কলম্বোর একটিসহ দেশটির তিনটি গির্জায় একযোগে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময় কলম্বোর তিনটি পাঁচ তারকা হোটেল– শাংরি লা, সিনামন গ্র্যান্ড ও কিংসবুরিতেও বোমার বিস্ফোরণ হয়।
সকালে ছয়টি স্থাপনায় হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দুপুরে কলম্বোর দক্ষিণাঞ্চলের দেহিওয়ালা এলাকায় একটি হোটেলে সপ্তম বিস্ফোরণটি ঘটে। এরপর কলম্বোর উত্তরে ওরুগোদাওয়াত্তা এলাকায় আরেকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।