যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ে আন্দোলনকারী প্রিয়া সাহার কিছু অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় এখন বাংলাদেশ।
প্রিয়া সাহা অভিযোগ করেছিলেন, ‘১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ছিল ২৯ দশমিক ৭ ভাগ। আর ২০০১ সালের জরিপ অনুযায়ী এখন সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ৯ দশমিক ৭ ভাগ। এখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক ১ কোটি ৮০ লাখ। তার মানে বিপুলসংখ্যক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছেন।’
এতে তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। রবিবার প্রিয়া সাহা নিজের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ‘শারি’ এর ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা ৩৫ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তায় সংখ্যালঘুরা দেশ থেকে ‘ডিসঅ্যাপিয়ার’ হয়ে যাচ্ছে বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন তার ব্যাখ্যা দেন।
সেখানে প্রিয়া বাংলাদেশের অর্থনীতি সমিতির সভাপতি আবুল বারকাতকে রেফারেন্স টেনে বলেন, ‘আমি এক সময় তার (আবুল বারকাত) সঙ্গে কাজ করেছি। আবুল বারকাত বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই গবেষণায় দেখিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। আমি সেই গবেষণা থেকেই রেফারেন্স দিয়েছি।’
কিন্তু প্রিয়া সাহার এই বক্তব্যকে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন আবুল বারকাত। তিনি জানান, তার গবেষণাকে বিকৃত করে তথ্য দেয়া হয়েছে। সোমবার আবুল বারকাত তার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
আবুল বারকাত বলেন, আমার হিসেবে প্রায় পাঁচ দশকে (১৯৬৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত) আনুমানিক ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষ নিরুদ্দিষ্ট হয়েছেন। (উৎসঃ আবুল বারাকাত, ২০১৬ বাংলাদেশ কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি, পৃ: ৭১) অর্থাৎ আমি কোথাও ‘৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌধ-খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন’- এ কথা বলিনি। উপরন্তু তিনি কোথাও বললেন না যে, আমার গবেষণা তথ্যটির সময়কাল ৫০ বছর (১৯৬৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল) পর্যন্ত।
প্রিয়া সাহা আরো দাবি করেন, ‘২০১১ সালে স্যারের সঙ্গে আমি সরাসরি কাজ করেছিলাম যার কারণে বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত।’
এ ব্যাপারে আবুল বারকাত তার সাক্ষরিত বিবৃতিতে বলেন, প্রিয়া সাহা কখনও আমার সহ গবেষক, গবেষণা সহযোগী অথবা গবেষণা সহকারী ছিলেন না। ২০১১ সালে সরকারি আদমশুমারির তথ্যের ভিত্তিতে ১৯০১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার বিভিন্ন ধর্মগোষ্ঠীর আনুপাতিক হার উল্লেখ করেছি মাত্র।