বালাগঞ্জে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। বালাগঞ্জ উপজেলার ঐতিত্যবাহী মাছ বাজার সংলগ্ন ঘাটে স্থাপিত বিসর্জন মঞ্চ থেকে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। বালাগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে মুর্তি নিয়ে এসে বিসর্জন মঞ্চ থেকে দেবীর প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ প্রতিমা বিসর্জন চলে।
বিসর্জন মঞ্চ থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিমা বিসর্জন প্রত্যক্ষ করেছেন সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বিশেষ করে সিলেটের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ অতুলনীয়। এখানে মুসলমান, হিন্দুসহ সকল ধর্মের মানুষের সহাবস্থান রয়েছে। তিনি। সাম্প্রদায়িক চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
বালাগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রজত চন্দ্র দাস ভুলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন তালুকদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিতব্য বিসর্জন মঞ্চের আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন – বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী মোস্তাকুর রহমান মফুর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুস সাকিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমানী নগর সার্কেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বোয়ালজুড় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনহার মিয়া, বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী আতাউর রহমান, ওসি তদন্ত আব্দুল হান্নান চৌধুরী, উপজেলা পূজা পরিষদের উপদেষ্টা বীরেন্দ্র কুমার দাস ছবি, অধির চন্দ্র দাস তালুকদার, বালাগঞ্জ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা: পবিত্র রঞ্জন বণিক, সাধারণ সম্পাদক শান্তিব্রত চৌধুরী, রাজনগর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অসিত চন্দ্র দেব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুধেন্দু দাস অমল, বালাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ জুনেদ মিয়া, পল্লী বিদ্যুতের চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন মাছুম, এস আই অপু দাস গুপ্ত, বালাগঞ্জ উপজেলা পূজা পরিষদের সহসভাপতি লাল মোহন দাস নান্টু, প্রদীপ দাস, স্বরুপ দে শংকু, বালাগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনুর আহমদ রুমন, কুশিয়ারার কূল পত্রিকার প্রকাশক হুসাইন আহমদ, বালাগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কওছর আহমদ, ফতেহপুর ইউনিয়ন পূজা পরিষদের সেক্রেটারি রাখাল চন্দ্র দাস, টেংরা ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ বিভাস রঞ্জন মালাকার, ,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পুলক দাস দুরন্ত, কোষাধ্যক্ষ অর্জুন দেবনাথ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সঞ্জয় কুমার দাস, রিংকু দাস, শ্যামাপদ দাস, লিটন দাস, লিটন রায়, জয়দীপ নাথ, মিন্টু নাথ, সাপ্তাহিক কুশিয়ারা কূলের নির্বাহী সম্পাদক আবুল হোসেন ইমন,
ছাত্রযুব ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারি অমল দাস আপন, বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি জুয়েল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুর রহমান বেলাল, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রতিমা বিসর্জন দেখতে কুশিয়ারার দুই তীরে দুপুর থেকেই ভিড় করেছেন দর্শনার্থীরা। এই এলাকাকে ঘিরে নানা পণ্যের মেলাও বসেছে। মেলায় সকল ধর্মের মানুষকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।
এর আগে দশমীর সকাল থেকে মণ্ডপ মণ্ডপে বাজতে শুরু করে বিষাদের সুর। চারদিনের উৎসবের শেষে পূজার পঞ্চম দিনে এসে শুরু হয় বিদায়ের আয়োজন। হিন্দু পুরান মতে, বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন দুর্গতিনাশিনী দুর্গা।
বালাগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, এবার বালাগঞ্জে ৩১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তন্মধ্যে ২৮টি মণ্ডপ সর্বজনীন, ৩টি পারিবারিক। তাঁরা আরও জানান প্রতি বছরের ন্যায় উপজেলা পূজা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপকে মিষ্টি ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে।