ওসমানী নগরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি, বঙ্গবীর জেনারেল এমএ জি ওসমানীর ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সুবিধা বঞ্চিত মহিলাদের মধ্যে সেলাইমেশিন বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ার) বেলা আড়াইটায় বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদ সিলেট এর উদ্যোগে স্থানীয় দয়ামীর বাজারস্থ এম এ জি ওসমানী গণগগ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরে ‘বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠায়, মহান মুক্তিযুদ্ধে ও সংসদীয় গণতন্ত্র রক্ষায় ওসমানীর অবদান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংসদের সভাপতি সৈয়ীদ আহমদ বহলুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন – তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আতাউর রহমান, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনা মিয়া, দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ক্রীড়াবিদ, লেখক ও গবেষক আব্দুল হাই মোশাহিদ, অভিবক্ত বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি, শিক্ষানুরাগী বদরুল আলম চৌধুরী, তাজপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড ওসমানীনগর শাখার সভাপতি জুবায়ের আহমদ শাহীন, দয়ামীর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ফারুক মিয়া, ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. শাইস্তা মিয়া, ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির অন্যতম সদস্য মামুনুর রশীদ খলকু, দয়ামীরবাজার বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুস শহীদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী নুরুল আমিন চৌধুরী লুকু, দয়ামীরবাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া, বালাগঞ্জ প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শাহ মো. হেলাল, ওসমানীনগর টাইমস এর সুয়েব আহমদ, ছাত্রনেতা ও শহীদ শেখ রাসেল স্মৃতি পরিষদ বালাগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি জাকির আহমদ, যুবনেতা মো. ছালিক মিয়া, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যের প্রারম্ভে বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবীর ওসমানীর কারনে বিশ্বের দরবারে আমরা আজ সম্মানিত। তাঁর মতো ক্ষণজন্মা বীর পুরুষের জন্ম না হলে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের হাল না ধরলে আমরা স্বাধীন হতে পারতাম না। পলাশীর আম্রকাননে বাংলার নবাব সিরাজ উদদৌলার সেনাপতি মীর জাফর আলী খাঁ বিশ্বাসঘাতকতা করায় স্বাধীনতা অস্তমিত হয়েছিলো এবং মীরজাফর আলী খাঁ আজ “মীরজাফর” বেঈমান হিসাবে চিহ্নিত। অপরদিকে আমাদের অহংকার এম এ জি ওসমানী, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাঁর নেতৃত্বের প্রতি আনুগত থেকে বিশ্বস্থ সিপাহসালার হিসাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনে দেয়ার কারনে তিনি আজ জাতির নিকট “বঙ্গবীর” হিসেবে বিশ্বের মুক্তিপাগল মানুষের কাছে সর্বোচ্চ সম্মানে ভুষিত। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসাবে আমি কথা দিচ্ছি আমরা বেঁচে থাকতে তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিষ্টিত এই প্রতিষ্ঠানকে ধংশ হতে দেবনা। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী গণগ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্তক প্রয়াস গ্রহণ করবো এবং অচিরেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে কার্যক্রম শুরু করবো ইনশাআল্লাহ। এ সময় তিনি উপজেলা পরিষদ ফান্ড থেকে ১লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদানের ঘোষণা করে স্ব স্ব অবস্থান থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।অনুষ্ঠানে সেলাই কাজে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ২জন সুবিধা বঞ্চিত কলেজ শিক্ষার্থী এবং ১জন সুবিধা বঞ্চিত গৃহিনীকে ওসমানী স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী, অর্গানাইজেশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান্স এর সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক লেখক, গবেষক ও কমিউনিটি নেতা মো. হাসান আলী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফুল কলি সিলেটের স্বত্বাধিকারী ও সংসদের সম্মানিত সদস্য আরিফুর রহমান চৌধুরী ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সিলেট জাগো নিউজের এডিটর মো. শিপন খানের অর্থায়নে ৩টি সেলাইমেশিন প্রদান করা হয়।সংসদের সভাপতি সৈয়ীদ আহমদ বহলুল তাঁর সমাপনী বক্তব্যে – অবিলম্বে ওসমানীনগরের দয়ামীরস্থ মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী গণগ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর পরিচালনার দায়িত্ব ওসমানীনগর উপজেলা প্রশাসনের নিকট ন্যাস্ত করার আহবান জানিয়ে, লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে ঐ প্রতিষ্ঠান চালু করাসহ সংসদের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন।