এঘটনায় আহতরা হলেন, একি গ্রামের আশিক আলী, আশিক আলীর ছেলে রিপন আহমদ, আব্দুল হক, আব্দুস সালাম, আনহার মিয়া, নজির মিয়া ও নজির মিয়ার ছোট এক শিশুসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭জন। হতাহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আশিক মিয়া ও আব্দুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তাদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ঈশাগ্রাই গ্রামের জয়নুল হক ধন মিয়ার সাথে একই গ্রামের নিহত শিপনের পিতা আশিক আলীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। কিছু দিন পূর্বে ধন মেম্বার আশিক আলীর বাড়ির চলাচলের রাস্তার সামনের ভূমি নিজের দাবি করে দেয়াল নির্মাণ করে আশিক আলীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেন। এ ছাড়াও ধন মেম্বারের পরিবারের পক্ষ থেকে দেয়া গ্রামের জামে মসজিদ নিয়েও আশিক আলীদের সাথে ধন মেম্বারের পক্ষের লোকজনদের বিরোধ দীর্ঘ দিন থেকে।
আশিক আলীর চলাচলের রাস্তায় ধন মেম্বারের দেয়াল নির্মাণ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিশিষ্ট সালিশ ব্যক্তিত্বরা একাধিকবার বিচার সালিশ করেও বিষয়টি মীমাংসা করতে পারেননি। সম্প্রতি আশিক আলীরা গ্রামের মসজিদের পুকুরে মাছ মারাতে গেলেও ধন মেম্বাবারের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়, এমনকি বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়।
বুধবার বিকেল থেকে ধন মেম্বারের পক্ষের এলাইছ মিয়ার সাথে আশিক মিয়ার পক্ষের ছোরাব মিয়ার মধ্যে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে ইফতারের ৮/১০ মিনিটি পূর্বে ধন মেম্বারের নেতৃত্বে এক পক্ষ এবং আশিক আলীর নেতৃত্বে অপর পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ধন মেম্বারের পক্ষের লোকজন শিপন মিয়াকে দেশী অস্ত্র (ছুলফি) দিয়ে আঘাত করলে শিপনের বুকে তা বিদ্ধ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে শিপনসহ উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় শিপন মিয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৭ টার সময় হাসপাতালে শিপন মারা যান।
নিহত শিপনের চাচা রানা মিয়া বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ধন মেম্বারের সাথে আমার ভাই আশিক মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। আমার ভাইয়ের রাস্তা ধন মেম্বার পাকা দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। আজ এলাইছ মিয়ার সাথে ছোরাব মিয়ার ঝগড়াকে কেন্দ্র করে আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে এলাইছ। এ সময় ধন মেম্বার এলাইছের পক্ষ নিয়ে আমার ভাই ভাতিজাদের উপর হামলা চালায়। ধন মিয়া নিজে ধারালো ছুলফি দিয়ে আমার ভাতিজাকে আঘাত করে হত্যা করে। আমি বাধা দিয়েও ধন মিয়াকে আটকাতে পারিনি। আমি আমার ভাতিজার হত্যার বিচার চাই।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদ মোবারক দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শিপন নামের এক যুবক নিহত হবার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন পলাতক রয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।