বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা ও অবদান সর্বজনস্বীকৃত। মুক্তিযুদ্ধের সময় দূর প্রবাস থেকেও বিভিন্নভাবে সহতায়র হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মুক্তিকামী বাঙালিরা। বিশেষ করে বিলেতের বাঙালিরা বিশ্বজনমত আদায়সহ নানাভাবে সহায়তা করেছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয়ে। পাকিস্তানী হানাদারদের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভ প্রদর্শন, মিছিল-মিটিং থেকে শুরু করে আর্থিক সহায়তায় তহবিল গঠন করে সহযোগি হয়েছিলেন বিলেতের বাঙালিরা। গ্রেট বৃটেনের অন্যান্য শহরগুলোর মধ্যে বার্মিংহামের বাঙালিদের স্বাধীনতা সংগ্রামে সম্পৃক্ততা ছিলো অন্যন্য উজ্জ্বল। প্রবাসে প্রথম বার্মিংহামবাসীরাই বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন। আর তাই বার্মিংহামের মাটিতেই বাংলাদেশের বিজয়ের ৫০ বছর তথা সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সেখানকার বাংলা গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন বাংলা প্রেসক্লাব বার্মিংহাম-মিডল্যাণ্ডস।
আগামী ১২ ডিসেম্বর, রোববার স্থানীয় রয়েল স্যুটে (২৭১ বির্চফিল্ড রোড, বার্মিংহাম, বি২০ ৩ ডিডি) অনুষ্ঠিত হবে এই সূবর্ণ জয়ন্তী। সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসব মঞ্চে বিলেতে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং এখানকার বিভিন্ন শহরে বসবাসকারী মুক্তিযোদ্ধাদের একত্রিত করে তাদের সম্মাননা প্রদান করে গৌরবের অংশীদার হওয়াই তাদের মূল উদ্দেশ্য। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে রয়েছে অর্ধশত কণ্ঠে বিজয়ের গান এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ডক্যুমেন্টারি প্রদর্শন। বিশাল এ আয়োজনকে সফল করতে উদ্যোক্তরা ইতোমধ্যে বৃটেনের বিভিন্ন শহরে ইতোমধ্যে রোডশো শুরু করেছেন। এরই অংশ হিসেবে গত ১৬ নভেম্বর, লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত কর্মসূচী তোলে ধরে সূবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান সফলে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠান সফলে সবার সহযোগিতা কামনা করেন বাংলা প্রেসক্লাব বার্মিংহাম-মিডল্যাণ্ডসের সভাপতি, বাংলা ভয়েস সম্পাদক মোহাম্মদ মারুফ। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম দুলাল। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সহসভাপতি ও এটিএন বাংলা ইউকের ব্যুরো প্রধান খায়সারুল ইসলাম সুমন, ক্লাবের কালচারাল সেক্রেটারি সাইফুর রাজা চৌধুরী পথিক, ক্লাবের এক্সিকিউটিভ মেম্বার ও বাংলামেইল সম্পাদক সৈয়দ নাসির আহমদ, এক্সিকিউটিভ মেম্বার ও বাংলা ভয়েসের সহকারী সম্পাদক জিয়া তালুকদার, এক্সিকিউটিভ মেম্বার ও আইওন টিভির বার্মিংহাম প্রতিনিধি ওবায়দুল কবীর খোকন। এছাড়া কমিউনিটির পক্ষ থেকে দেশ ফাউণ্ডেশনের চেয়ারম্যান মিসবাউর রহমান মিসবাহ উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান সফলে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর ঐতিহাসিক ক্ষণকে সীমিত সাধ্য নিয়ে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলা প্রেসক্লাব বার্মিংহাম-মিডল্যাণ্ডস। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আনুষ্ঠানিক পূর্বালোচনা অনেকে সাথে করার সম্ভব হয়নি। সবার সহযোগিতা কামনা করে বলা হয়, ঐতিহাসিক এ অনুষ্ঠানকে সফল করতে সবাই নিজেদের অনুষ্ঠান মনে করে আসলে আমরা কৃতার্থ হবো। এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিলেত থেকে যারা অবদান রেখেছিলেন তাদের অনেকেই আজ বেঁচে নেই। যারা এখনো বেঁচে আছেন তাদের সাথে নতুন প্রজন্মের পরিচিত হওয়াসহ ৭১-এ তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা সরাসরি জানার একটি ভালো সুযোগ হতে পারে বিপিসি আয়োজিত এ অনুষ্ঠান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, অনুষ্ঠান সফলে বৃটেনের বিভিন্ন শহরে রোডশো’র আয়োজন করা হয়েছে। আর অনুষ্ঠানে শুধু বার্মিংহাম নয়, বৃটেনের বিভন্ন শহর লোকজনের উপস্থিতির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় এমপি, মেয়র, কাউন্সিলারগণ উপস্থিত থাকবেন। অর্ধশত কণ্ঠে বিজয়ের গান ছাড়াও গ্রহণ করা হয়েছে অন্যান্য কর্মসূচী।